শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

করোনায় গর্ভবতী মায়েদের করণীয়

প্রকাশঃ

করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত আর মৃত্যুর সংখ্যা লাগামহীন বেড়ে চলছে। সববয়সী মানুষের জন্যই এ সময়টা ঝুঁকিপূর্ণ। এমতাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য এবং গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন আর শেষ নেই।

ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে গর্ভবতীদের মায়েদের শরীরে এই ভাইরাসের প্রভাব নিয়ে কয়েকটি বিষয় উঠে এসেছে।

চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক ভাইরাসের প্রভাব:

  • অন্যান্য মানুষের মতোই গর্ভবতীদেরও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে জ্বর, হাঁচি, কাশি, গলা ব্যথা, নিউমোনিয়া হতে পারে।
  • মায়ের শরীর থেকে গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ (ভার্টিক্যাল ট্রান্সমিশন) হয় কিনা তা এখনও সঠিকভাবে জানা যায়নি। অন্তত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তাই বলছে।
  • তবে বুকের দুধের মধ্যে দিয়ে এই ভাইরাস সন্তানের শরীরে যেতে পারে না।

খুব ভরসাযোগ্য বৈজ্ঞানিক তথ্যের অভাব থাকলেও কিছু কিছু মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, অনেক সময়ই প্রত্যাশিত দিনের আগেই ডেলিভারি হয়ে যেতে পারে এই রোগের সংক্রমণে। তাছাড়াও গর্ভপাত, গর্ভস্থ সন্তানের নড়াচড়া কমে যাওয়া, মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমনটাই বলেছেন একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ।

শরীরের পাশাপাশি মায়েদের মনকেও এই ভাইরাস দখল করে নেয়। একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জানান, অত্যাধিক মানসিক চাপ, হতাশা, মৃত্যু ভয় থেকে গর্ভপাতের শঙ্কাও অমূলক নয়।

গর্ভাবস্থায় যা যা মেনে চলবেন:

  • অন্যান্য মানুষের মতোই হাত জীবাণুমুক্ত রাখা ও কাশির শিষ্টাচার খুব ভাল করে মানতে হবে।
  • হাঁচি, কাশি, জ্বর হয়েছে এমন মানুষের থেকে দূরে থাকাও বাধ্যতামূলক।
  • পুষ্টিকর খাবার, যেমন শাকসবজি, প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে।
  • দিনে অন্তত ৮ ঘণ্টা ঘুমনো ভীষণ দরকারি।
  • অযথা দুশ্চিন্তা না করে পছন্দের কাজে সময় দিন।
  • হালকা ঘরের কাজ অবশ্যই করবেন। উপুড় হয়ে বসে করতে হয় এমন কাজ এড়িয়ে চলাই ভাল।

এছাড়া এই লকডাউনের সময় যারা নতুন মা হলেন, তারা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে যেতে পারছেন না। এমন এক পরিস্থিতিতে মূল সাবধানতাগুলো মেনে চলুন।

গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ দেখা খুব জরুরি। সেক্ষেত্রে নিজেরাই ডিজিটাল মেশিনের সাহায্যে দেখে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারেন।

ইউএসজি স্ক্যান আর রক্তপরীক্ষা করে নিতে হবে। সেটা একটু সময় নিয়ে গিয়ে করাই ভাল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণ আছে এমন মহিলাদের নর্মাল ডেলিভারিতে খুব কিছু অসুবিধা নেই।

করোনা সংক্রমিত কোনো রোগীর যদি কোন কারণে সিজারিয়ান সেকশান করতেই হয় তবে সেক্ষেত্রে স্পাইনাল অ্যানেস্থেসিয়াতেই করা উচিত। কারণ জেনারেল অ্যানেস্থেশিয়ার ফলে অনেক ড্রপলেট তৈরি হয় যা পুরো অপারেশন থিয়েটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

করোনায় আক্রান্ত মা সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর যদি বুকের দুধ খাওয়ানোর অবস্থায় থাকেন, তাহলে সাবধানতা নিয়ে তা খাওয়াতেই পারেন। কিন্তু বেশি অসুস্থ থাকলে, দুর্বল থাকার কারণে বুকের দুধ এক্সপ্রেস করেও অন্য কাউকে দিয়েও শিশুটিকে খাওয়াতে পারেন। ফর্মুলা ফিড দেওয়ার চেয়ে এটাই ভাল। এটি শিশুর শরীরে ইমিউনিটি বাড়িয়ে করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। সন্তানসম্ভবা অবস্থায় করোনার লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ