প্রচ্ছদ এ্যভিয়েশেন ও ট্যুরিজম ঈদের ছুটিতে এত পর্যটক গত ৫ বছরে দেখেনি সিলেটবাসী

ঈদের ছুটিতে এত পর্যটক গত ৫ বছরে দেখেনি সিলেটবাসী

0

ঈদের ছুটিতে এত পর্যটক গত পাঁচ বছরের মধ্যে দেখেননি বলে জানান স্থানীয়রা। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর চারটি ঈদে বন্ধ ছিল সিলেটের পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রগুলো। ভ্রমণপ্রিয় লোকজনকে বাধ্য হয়েই অনেকটা বাসাবাড়িতে ঈদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস সারতে হয়েছিল। এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় কোনো বিধিনিষেধ নেই।

এ কারণেই ঘরে বসে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে ওঠা পর্যটকরা সিলেটে এসেছেন অনেকটা জনস্রোতের মতো। সিলেট জেলার সবগুলো পর্যটনকেন্দ্রই এখন লোকে লোকারণ্য। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর আর বিছানাকান্দি সব জায়গায় পর্যটকদের ভিড় দেখা গেছে।

সিলেটে পর্যটকদের ঢল নামায় খুশি পর্যটকনির্ভর পেশার মানুষেরা। হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, ট্যুর গাইড, পর্যটকদের ছবি তুলে সংসার চালানো আলোকচিত্র শিল্পীরা বলছেন, দীর্ঘ দুই বছর পর প্রাণ ফিরেছে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে।

প্রকৃতির টানে ছুটে আসা পর্যটকদের বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাসে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রলোতে অন্যরকম এক আবহের সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের ছুটিতে দ্বিতীয় দিনে মুখরিত হয়ে উঠেছে সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো।

পাহাড়-টিলা, নদী আর পাথর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সিলেটের গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছানাকান্দি, জৈন্তাপুরের সারি নদী, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর, উৎমাছড়া এবং মিঠাপানির একমাত্র জলারবন রাতারগুলের সবুজের সমারোহে পর্যটকদের ভিড় সবচেয়ে বেশি।

সিলেট নগরে এমএজি ওসমানী শিশুপার্ক, চা-বাগানের ছড়ায় স্থাপিত ওয়াকওয়েগুলোতেও শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সী লোকজনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সিলেট শহরতলির প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রও পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো।

বুধবার (৪ মে) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দরগাহে হযরত শাহজালাল (র.)-এর মাজারের পাশাপাশি সিলেট নগরের বিভিন্ন পার্কগুলোতে দল বেঁধে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সিলেটের সবকটি হোটেল-মোটেলে রুম খালি নেই। সবই বুকড হয়ে গেছে।

বেসরকারি একটি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করা রিজওয়ান বলেন, দুই বছর করোনার জন্য সিলেট আসতে পারিনি। এবার এসে অনেক ভালো লাগছে।

নরসিংদী থেকে ঘুরতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সালমা বেগম বলেন, ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও করোনার কারণে গত দুই বছরে সিলেট আসতে পারিনি। এবার ঈদে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ জাফলং এসেছি। আমার ছোট ভাইবোনরা বাঁধভাঙা আনন্দ-উচ্ছ্বাস করছে।

মেঘালয়ের কোলঘেঁষা ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের শীতল পানিতে শরীর জুড়াতে এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যুবক কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আগেও এসেছি কিন্তু সাদা পাথরে এই প্রথম এলাম। এখানে স্বচ্ছ পানির নিচে জমে থাকা সাদা পাথর দেখে ভালো লাগছে। ভারত থেকে নেমে আসা হিমশীতল পানিতে গা ভাসিয়ে দিলে এক ধরনের রোমাঞ্চকর অনুভূতি অনুভব করা যায়।’

সিলেট অঞ্চলের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন বলেন, ঈদুল ফিতর-পরবর্তী সময়ে চারদিন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় স্থানীয় পর্যটকসহ ৮ থেকে ১০ লাখ পর্যটক থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য পর্যটকদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) লুৎফর রহমান বলেন, পর্যটকদের হয়রানি কমাতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনসমাগমস্থল চিহ্নিত করে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version