করোনার পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার ওয়েবসাইট দেওয়া সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা এখন ২ লাখ ৭৫ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রদুর্ভাব শুরুর পর বিশ্বের ৪০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাসের। করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ এখন যুক্তরাষ্ট্র। আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় যুক্তরাষ্ট্রের ধারেকাছে কোনো দেশ নেই। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৩ লাখের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত তের লক্ষাধিক মানুষের ৭৮ হাজারের বেশি মারা গেছে।
তবে এরমধ্যে আশার খবরও আছে। নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন পৌনে চোদ্দ লাখ রোগী। আক্রান্ত বেশি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি সুস্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে; ২ লাখ ২০ হাজার। এরপর জার্মানিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭০ হাজারের মধ্যে ১ লাখ ৪০ হাজার সুস্থ। স্পেনে এই সংখ্যাটা ১ লাখ ৬৮ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন গড়ে ২৮ হাজার মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সবচেয়ে বাজে অবস্থা দেশটির জনবহুল নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের। শুধু নিউইয়র্কে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজারের বেশি। নিউইয়র্কে যত মানুষ আক্রান্ত হয়েছে বিশ্বের অন্য কোনো দেশে তত আক্রান্ত নেই। সেখানে মারা গেছে ২৬ হাজার ৫৮১ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে স্পেনে ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। আক্রান্তদের মধ্যে ২৬ হাজার ৩০০ জন মারা গেছে। এছাড়া ২ লাখ ১৫ হাজার সংক্রমিত ও ৩০ হাজার ২০০ মৃত্যু নিয়ে স্পেনের পরই ইতালির অবস্থান। করোনায় মৃত্যু ৩১ হাজার ছাড়িয়েছে যুক্তরাজ্যেও। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার।
আক্রান্তের দিক দিয়ে রাশিয়ার অবস্থান পঞ্চম। সেখানে শনাক্ত ১ লাখ ৮৮ হাজারের বেশি রোগীর ১ হাজার ৭২৩ জন মারা গেছে। এছাড়া ফ্রান্সে কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ। দেশটিতে করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা ২৬ হাজার ২৩০। জার্মানিতে মৃতের সংখ্যা ৭ হাজার ৫০০ প্রায়।
আক্রান্তের দিকে দিয়ে এরপরই রয়েছে ব্রাজিল ও তুরস্ক। ব্রাজিলে আক্রান্ত ১ লাখ ৪১ হাজারের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার ও তুরস্কে আক্রান্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫০ কোভিড-১৯ রোগীর ৩ হাজার ৭০০ জন মারা গেছেন। ইরানের শনাক্ত রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। দেশটিতে সরকারিভাবে ৬ হাজার ৫০০ মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে।
উহানে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও আক্রান্তের দিক দিয়ে চীনের অবস্থান এখন এগারো। দেশটিতে শনাক্ত ৮৪ হাজার রোগীর ৪ হাজার ৬৩৭ জন মারা গেছেন এবং সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৭৮ হাজার। এরপর কানাডায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ হাজারের বেশি। মারা গেছে সাড়ে ৪ হাজার। পেরুতে আক্রান্ত ৫৮ হাজারে মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬২৭ জনের।
প্রতিবেশী ভারতের করোনার সংক্রমণ গত কয়েকদিনে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। দেশটিতে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৬০ হাজার। আক্রান্তদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছে। এদিকে পাকিস্তানে আক্রান্ত ২৬ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬০০ জনের। শুক্রবার ১ হাজার ৭০০ এর বেশি আক্রান্ত।
ইউরোপের আরেক দেশ বেলজিয়ামে আক্রান্ত ৫২ হাজার কোভিড-১৯ রোগীর ৮ হাজার ৫২১ জন মারা গেছে। এছাড়া নেদারল্যান্ডসে যে ৪২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৪০০ জন আর নেই। এদিকে সৌদি আরবে আক্রান্ত ৩৫ হাজারের ২২৯ জন ইতোমধ্যে মারা গেছে। মেক্সিকোতে মারা গেছে প্রায় ৩ হাজার।
এছাড়া মৃত্যুর তালিকায় উপরে থাকা দেশগুলো যথাক্রমে সুইডেন ৩ হাজার ১৭৫, আয়ারল্যান্ড ১ হাজার ২৯, সুইজারল্যান্ড ১ হাজার ৮১০, ইকুয়েডর ১ হাজার ৬৫৪, ইন্দোনেশিয়া ৯৪৩। প্রসঙ্গত, নতুন ভাইরাসের এখনো কোনো ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ইবোলার ওষুধ রেমডেসিভি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।