প্রচ্ছদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী তেল-গ্যাস গ্যাস সংকট নগরবাসীকে আরও সপ্তাহখানেক ভোগাতে পারে

গ্যাস সংকট নগরবাসীকে আরও সপ্তাহখানেক ভোগাতে পারে

0
গ্যাস সংকট

রমজানের প্রথম দিন ছিল রোববার (৩ এপ্রিল)। এর আগে শনিবার (২ এপ্রিল) রাত থেকেই দেশজুড়ে তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দেয়। গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দ্বিগুণ হয়েছে।

বহুজাতিক কোম্পানি শেভরনের মালিকানাধীন বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের কারণে এই সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। আজকালের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে পেট্রোবাংলা। তবে সূত্র জানিয়েছে, গ্যাস সংকট আরও সপ্তাহখানেক থাকতে পারে।

হঠাৎ করে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন রাজধানীবাসী। সকাল থেকে গ্যাসের চাপ ছিল না। টিমটিম করে চুলা জ্বলছিল। দুপুরের পর থেকে চুলা একবারেই জ্বলেনি। গ্যাস সংকটের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দেন।

সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জের অধিকাংশ শিল্পকারখানায় গতকাল রোববার সকাল থেকেই গ্যাসের চাপ কম ছিল।

জানা যায়, দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস উৎপাদনকারী বিবিয়ানা গ্যাসক্ষেত্রের সরবরাহ লাইনে হঠাৎ বালুর উপস্থিতির কারণে শনিবার রাত দেড়টার দিকে ছয়টি কূপের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে দিনে ১২৭ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহকারী গ্যাসক্ষেত্রটির উৎপাদন এক ধাক্কায় ৪৫ কোটি ঘনফুট কমে যায়। একই সঙ্গে এলএনজি থেকে মাত্র ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস মেলে। সব মিলিয়ে গ্যাসের ঘাটতি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করে।

গত শনিবার যেখানে ২৯৭ কোটি ঘনফুট গ্যাস দিয়েছিল পেট্রোবাংলা, গতকাল রোববার তা কমে দাঁড়ায় ২৭৮ কোটি ঘনফুটে। যেখানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৪২০ কোটি ঘনফুট। গতকাল দিনভর প্রসেস প্ল্যান্ট সংস্কার করা হয়। কিন্তু কোন কূপ থেকে বালু আসছে, তা রাত ৮টা পর্যন্ত চিহ্নিত করা যায়নি। সূত্র মতে, আজকালের মধ্যে চার থেকে পাঁচটি কূপের উৎপাদন পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও একটি কূপ চালু হতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগবে। ১০ এপ্রিল এলএনজির একটি কার্গো দেশে আসার কথা রয়েছে। এর পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, শেভরন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। সন্ধ্যার মধ্যে একটি কূপ থেকে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়েছে। আশা করি সোমবার দিনের মধ্যে সংকট কমে আসবে।

এদিকে গ্যাস সংকটের কারণে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কমপক্ষে ১৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন থাকলেও পেট্রোবাংলা সরবরাহ করে ১১০ থেকে ১১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস। গতকাল আরও ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম দেওয়া হয় বিদ্যুতে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গ্যাস সংকটের কারণে প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হয়েছে।

আরও পড়ুন : হঠাৎ গ্যাস সংকটে দুর্ভোগে রাজধানীবাসী

এ বিষয়ে গতকাল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের স্বল্প চাপ দেখা দিয়েছে। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যাচ্ছে। আরও বলা হয়, গ্যাস সরবরাহে ঘাটতিজনিত কারণে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে কোনো কোনো এলাকায় সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version