দেশের বৃহত্তম মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইলফোন অপারেটর রবির কাছে সরকারের পাওনা পরিশোধ না করায় লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। অপারেটরদ্বয়ের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না- এই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিটিআরসিকে লাইসেন্স বাতিলের নোটিস ইস্যু করার অনুমতি দিয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ার পর বিটিআরসি গ্রামীণফোন ও রবিকে লাইসেন্স বাতিলে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন অ্যাক্ট, ২০০১ এর ৪৬ ধারা অনুযায়ী এ নোটিস পাঠানো হচ্ছে, যেখানে যৌক্তিক কারণে কমিশনকে লাইসেন্স বাতিল ও স্থগিতের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো মোবাইল অপারেটরের লাইসেন্স বাতিল বা স্থগিতের আগে কমিশনকে সংশ্লিষ্ট অপারেটরের ব্যাখ্যা চেয়ে উত্তর দেওয়ার জন্য ৩০ দিন সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস করতে হবে।
উল্লেখ, বিটিআরসির উদ্যোগে পরিচালিত বিশেষ নিরীক্ষায় কোম্পানি দুটির বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকির ঘটনা উদঘাটিত হয়। সে অনুসারে এই দুই কোম্পানির কাছে সরকারের মোট রাজস্ব পাওনা ১৩ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা। আর রবির কাছে পাওনা আছে ৮৬৭ কোটি টাকা।
গত বছরের জুলাই মাসে সাত কার্যদিবসের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধে রবিকে চিঠি পাঠিয়েছিল বিটিআরসি। আর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে একই দাবিতে চিঠি পাঠানো হয় গ্রামীণফোনের কাছে।
এর আগে গ্রামীণফোন ও রবির কর্তৃপক্ষ বিটিআরসির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল। তবে তাতে কোনো সাড়ে দেয়নি নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বরং কোম্পানি দুটির উপর চাপ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গত ২ জুলাই গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেয় তারা। তবে ব্যবহারকারীদের পক্ষ থেকে তুমুল সমালোচনার প্রেক্ষিতে এক সপ্তাহের মধ্যে আবার ওই ব্যান্ডউইথ পুনর্বহাল করা হয়। এবার চুড়ান্ত চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হচ্ছে।