বিশ্বের কয়েকটি দেশে এখন করোনাভাইরাসের টিকার মিশ্র ডোজ নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও এ নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে এখন সিনোফার্ম, মর্ডানা এবং ফাইজারের ৫৭ লক্ষ ডোজ টিকা রয়েছে।
বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি মাসে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয় অক্সফোর্ড-আ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে।
ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে সেই টিকার পূর্বনির্ধারিত ডোজ পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেলে বিরাট সঙ্কটে পড়ে সরকারের টিকা কার্যক্রম। সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে চেষ্টা করে টিকা আনার। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সরকারের হাতে এখন চীনের সিনোফার্ম , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না এবং ফাইজারের টিকা রয়েছে। প্রায় দুই মাসের বিরতির পর সরকার আবারো শুরু করেছে গণটিকা কর্মসূচী। কিন্ত সমস্যা রয়েছে নানা জায়গায়। বাংলাদেশে এমন ১৫ লাখ মানুষ রয়েছেন, যারা অক্সফোর্ড-আ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছিলেন কিন্তু এখনো ২য় ডোজ নিতে পারেননি।
একই টিকার দুটি ডোজ না দিয়ে বরং দুটি ভিন্ন টিকার দুটি ডোজ দিলে সেটি নিরাপদ এবং বেশি কার্যকর কী না, তা নিয়ে বিশ্বের নানা স্থানে গবেষণা চলছে। জার্মানির চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মেরকেল নিজে দুটি ভিন্ন টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন। তাকে প্রথম ডোজ হিসেবে দেয়া হয়েছিল অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা,আার দ্বিতীয় ডোজ মডার্নার। বাংলাদেশে যখন টিকার একটা অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে তখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী চিন্তা করছে?
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর এর পরিচালক তাহমীনা শিরীন বলেন স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং আইইডিসিআরের পক্ষে টিকার মিশ্র ডোজ ব্যবহারের গবেষণার জন্য একটা প্রোটোকল পত্র তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছেন। তাহমীনা শিরীন বলেন “একদিকে কোভিশিল্ডের ভ্যাকসিন আসছে না, আবার অন্যান্য জায়গা থেকে আমরা ভ্যাকসিন পাচ্ছি। সেই ক্ষেত্রে আমাদের ‘মিক্স এন্ড ম্যাচ’ করতেই হবে। কারণ একেক সময় একেক রকম ভ্যাকসিন আসবে। তাই এই গবেষণাটা এখন বাংলাদেশের জন্য জরুরি। সেই গবেষণা আমরা করবো এবং তার ফলাফলটা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো”
আইইডিসিআর বলছে, সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা এসেছে কিছু তহবিল উদ্বৃত্ত আছে, সেই অর্থ কাজে লাগানোর জন্য বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গবেষণা প্রোটোকল পত্র জমা দিয়েছে।
তবে প্রতিযোগিতামূলক যাচাই-বাছাই এর পর তহবিল পাওয়ার ভিত্তিতে গবেষণা শুরু করা নির্ভর করবে। তবে গবেষণার ফল পাওয়া সময় সাপেক্ষ হবে বলে জানাচ্ছে সংস্থাটি। এদিকে সরকারের টিকা বিষয়ক ন্যাশনাল ইমুনাইজেশন টেকনিক্যাল এক্সপার্ট গ্রুপ বা নাইটেগ টিকার মিশ্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নাইটেগের সদস্য সচিব ড, বে-নজীর আহমেদ দেশের মধ্যে মিশ্র ডোজের গবেষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন দিলে আর কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন।