এখন থেকে কেউ বিদেশ ঘুরতে গেলেও তাকে কর অফিসে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে। বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। নতুন আয়কর আইনে এমন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। আইনটি পাসের জন্য অচিরেই জাতীয় সংসদে বিল আকারে উত্থাপন করা হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
নতুন আইনে দেশের কারও বিদেশে সম্পদ থাকলে তা যদি কর কর্মকর্তারা প্রমাণসহ জানতে পারেন, তাহলে ওই সম্পদের বিপরীতে জরিমানা আরোপ করার বিধান রাখা হয়েছে।
আইনে নতুন করে তিনটি শর্ত যুক্ত হচ্ছে। সেগুলো হলো–কোনও করবর্ষে করদাতা যদি চিকিৎসা বা হজসহ ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বিদেশ গমন ছাড়া অন্য কোনও কারণে ব্যক্তিগতভাবে বিদেশে যান, তাহলে তাকে সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, কোনও করদাতা যদি কোনও এক করবর্ষে দেশের বাইরে সম্পদ কেনেন, তাহলেও তাকে সম্পদের বিবরণী দিতে হবে। তৃতীয়ত, কোনও কোম্পানির শেয়ারধারী পরিচালক হলেও সম্পদের বিবরণী জমা দিতে হবে।
বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশে, আয়কর রিটার্ন জমার সময় বর্তমানে সম্পদের বিবরণী জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি শর্ত আছে। এ তিন শর্তের একটি প্রযোজ্য হলেই সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক। শর্তগুলো হলো—১. অর্থবছরে মোট সম্পদের পরিমাণ ৪০ লাখ টাকা হলে; ২. একটি মোটরগাড়ির মালিক হলে; ৩. সিটি করপোরেশন এলাকায় গৃহ-সম্পত্তি বা অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হলে। এসব সম্পদে বিনিয়োগ করলেই বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সম্পদের রিটার্ন দিতে হয়।
নতুন এই বিধান কার্যকর হলে কেউ যদি বিদেশে ঘুরতে যান, তাহলে দেশে ফিরে রিটার্ন দেওয়ার সময় সম্পদের হিসাব কর কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। আর যদি করযোগ্য আয় না থাকে, তবু দেশের সীমানা পেরোলেই ফ্ল্যাট, জমি, আসবাব, ব্যাংক ব্যালান্সসহ যাবতীয় সম্পদের তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে নতুন আইনে। বর্তমানে কর শনাক্তকরণ নম্বরের (টিআইএন) সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), পাসপোর্ট কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের স্বয়ংক্রিয় সম্পৃক্ততা রয়েছে। ফলে এখন আর কেউ বিদেশ ভ্রমণ করে তা চাইলেও লুকাতে পারবেন না।