আজ ২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব পানি দিবস ২০২১’ পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘ভ্যালুয়িং ওয়াটার’। টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (এসডিজি) বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকার নিরাপদ পানির নিশ্চয়তা প্রদানসহ প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা ও পানি দূষণ কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
নিরাপদ পানির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও কমছে না নদী দূষণ। নদীগুলোর সেই আগের রূপ এখন আর নেই। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা , বালু, ধলেশ্বরী ঢাকাকে ঘিরে রাখা এই পাঁচ নদ-নদীর দূষণের মাত্রা বাড়ছেই। গত তিন বছরে এগুলোর পানির মানের কোনো উন্নতি হয়নি।
পরিবেশদূষণ আর বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে সরকার রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে সাভারের হেমায়েতপুরে চামড়াপল্লী স্থানান্তর করলে নদী দূষণ কমছে না। উল্টো এক নদী বাঁচাতে গিয়ে আরেক নদী মরছে। পানি দূষণ বাড়ছে ধলেশ্বরীতে।
২০০৩ সালে সাভারের হেমায়েতপুরে ৬০০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে চামড়া শিল্পনগরী গড়ে তোলার কাজ শুরু করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। তবে প্রাথমিক অবকাঠামোর কাজ শুরু হয় ২০০৭-০৮ অর্থবছরে। এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি এই শিল্পনগরী। অবকাঠামো খাতের কাজ প্রায় শেষের দিকে হলেও সিইটিপি ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থার কাজ শেষ না হওয়ায় ধলেশ্বরী নদী দূষণের কবলে পড়েছে।
নদী বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ইনামুল হক বলেন, রাজধানীর পরিবেশ ও বুড়িগঙ্গা নদীদূষণ রোধে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করে আদতে কোনো লাভ হয়নি। শিল্প উদ্যোক্তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের বর্জ্যর যে মানদণ্ডে নদীতে ফেলার কথা, তা মানছেন না। ফলে ধলেশ্বরীর পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা একেবারে কমে গেছে। এ কারণে মাছসহ অন্য প্রাণী বাঁচতে পারছে না। ফলে ওই নদীর ওপর নির্ভরশীল মানুষ ও জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের উচিত শিল্প উদ্যোক্তাদের এসব মানদণ্ড পালনে বাধ্য করা।
পানি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান খান বলেন, এখন ধলেশ্বরীর পানি পান করা তো দূরের কথা, নদীর পারে গিয়ে দাঁড়ানোরও উপায় নেই।