প্রচ্ছদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী বেসরকারি খাতে যাচ্ছে জ্বালানি, বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

বেসরকারি খাতে যাচ্ছে জ্বালানি, বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

0
জ্বালানি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সৃষ্ট জ্বালানি সংকট নিরসনে বেসরকারিভাবে জ্বালানি আমদানির দ্বার খুলে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। সোমবার ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জ্বালানি বিভাগকে নির্দেশনাও দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

এ ছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নয়, সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম পুনঃনির্ধারণ করতে পারবে- এমন বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ফুয়েলসহ অন্যান্য এনার্জি বেসরকারিভাবে আমদানির ব্যবস্থা করা যায় কি-না, তা নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দুটি অপশন- বেসরকারি আমদানিকারকেরা আমদানি করে নিজেরাই বাজারে বিক্রি করলে কি বেশি ভালো হবে? তিনি বলেন, এখন যে আইন আছে তারা (বেসরকারি আমদানিকারকেরা) ক্রুড অয়েল আনবে, এনে তারা যদি রিফাইন করে। এখন তো আমাদের বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) ছাড়া কেউ জ্বালানি বাজারজাত করতে পারে না। সাধারণত ক্রুড অয়েল রিফাইন করে ৪১ থেকে ৪২ শতাংশ রিফাইনড অয়েল হয়।

তিনি বলেন, রিফাইনড অয়েলটা তারা বিপিসি’র কাছে দিয়ে দিলো অথবা তারা সরাসরিভাবে বাজারজাত করতে পারে কি-না সেটাও দেখতে হবে।

তবে যেটা করতে হবে তা হলো, ক্রুড অয়েল যারা আনবে, বিটুমিনসহ অন্যান্য যে উপজাত পণ্য আসবে এগুলো হয় তারা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করবে অথবা বাইরে রপ্তানি করবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, তবে রিফাইনড অয়েল বিষয়ে দুটি অপশন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হয় তারা বিপিসি’র কাছে বিক্রি করে দিতে পারে বা বিপিসি তাদের অন্য কোনো ম্যাকানিজ বা আইন সংশোধন করে বিক্রির অনুমতি দিতে পারে। এক্ষেত্রে যেটা রিফাইনড হলো সেটা আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য কি-না, তা বিএসটিআইকে মনিটরিং করতে হবে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আলোচনায় রাখতে বলা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই সিদ্ধান্তে যেতে বলা হয়েছে। বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আমাদের এখানে বিইআরসি সব (দাম সমন্বয়) হ্যান্ডেল করে। কিন্তু বিইআরসি’র কিছু কিছু জায়গায় একটু প্রবলেম হয়, যেমন ৯০ দিন পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত না দিয়ে থাকতে পারে। কারণ আইনে বলা আছে বিইআরসি ৯০ দিনের মধ্যে এগুলোর সব শুনানি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবে। অনেক সময় আমাদের ইমিডিয়েট প্রয়োজন আসে, অনেক সময় তারা ঠিকভাবে সমন্বয় করতে পারে না। সে জন্য বিইআরসি’র আইনে সংশোধন আনা হচ্ছে জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকার প্রয়োজনবোধে বিভিন্ন কারণে এ ট্যারিফ নির্ধারণ করতে পারবে। তাহলে কী মন্ত্রণালয় এটি যেকোনো সময় করতে পারবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। যেমন এখন ধরুন ৯০ দিন সময় নিয়ে ওনারা (বিইআরসি) শুনানি নেন। একটা ইমার্জেন্সি এলো। আবার অনেক সময় দাম কমে গেল কিন্তু বিইআরসি ৯০ দিন ধরে দাম কমাবে। সরকার হস্তক্ষেপ করে একটা নোটিফিকেশন দিয়ে দাম কমিয়ে নিয়ে আসতে পারবে। স্বাভাবিকভাবে দাম সমন্বয়ের কাজ বিইআরসি কমিশনই করবে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার এক্ষেত্রে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version