বর্তমানে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে কমবেশি সবাই অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার সমস্যায় ভুগছেন। এর কারণ হলো অনিয়মিত জীবন-যাপন। সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) অনুসারে, স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং নির্দিষ্ট ধরণের ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি থাকে।
একবার ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে তা কমানো বেশ কষ্টকর। অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে কঠোর ডায়েট মানার পাশাপাশি ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে ব্যায়াম করেন। তবে অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না। এতে ওজন কমলেও আবার ব্যায়াম-ডায়েট ছেড়ে দিলে আবার ওজন বাড়তে থাকে।
ওজন কমাতে সঠিক খাদ্যাভাস ৭০ শতাংশ ও শরীরচর্চা ৩০ শতাংশ অবদান রাখে, এমনই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই এ দুটো বিষয়ের দিকেই খেয়াল রাখা জরুরি। এর পাশাপাশি ওজন কমানোর সময় আপনি কী খাচ্ছেন তা জানা উচিত। দ্বিতীয়ত আপনার প্লেটের খাবারগুলোর দিকে নজর রাখুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তবে তাহলে আপনার প্লেটে কী আছে সেদিকে নজর রাখুন। দৈনিক তা লিপিবদ্ধ করার মাধ্যমে আপনার ওজন দ্রুত কমাতে পারবেন। অবিশ্বাস্য হলেও বিষয়টি কিন্তু কার্যকরী।
আপনি কী খাচ্ছেন ও কতটুকু খাচ্ছেন তার হিসাব রাখাকে ফুড ডায়েরি বা ফুড জার্নালিং বলা হয়। এতে তারিখসহ প্রতিদিনের ডায়েট চার্ট লিখে রাখুন। এর ফলে আপনি ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন সহজেই।
ফলে পরের দিনের জন্য আপনার খাবারের পরিকল্পনা করা সহজ হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফুড জার্নালিংয়ের মাধ্যমে নিজের খাদ্যাভ্যাস বুঝতে ও তার উপর ভিত্তি করে ডায়েট চার্ট প্ল্যান তৈরি করতেও সাহায্য করে।
বিভিন্ন গবেষণা প্রমাণ করে যে, স্থূলতা কমানোর ক্ষেত্রে দৈনিক তালিকা ভালো কাজ করে। একটি সমীক্ষায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, দৈনিক ১৫ মিনিটের এই অভ্যাস আপনাকে বিস্ময়করভাবে স্থূলতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
১৫০ জন লোকের উপর এই সমীক্ষা করা হয়। যারা ৬ মাস ধরে তাদের খাদ্যাভ্যাসের চার্ট অনুসরণ করেছিলেন। পরে দেখা যায়, তারা ডায়েট বা জিম না করেই কয়েক মাসের মধ্যেই স্থূলতা ঝরিয়েছেন, তাও আবার নিজেদের ফুড জার্নাল অনুসরণ করে। বিষয়টি সত্যিই অবিশ্বাস্য!
ভার্মন্ট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনার বিজ্ঞানীদের একটি দলের গবেষণায় দেখেছেন, যারা শরীরের ওজনের ১০ শতাংশ কমিয়েছেন তারা প্রথম মাসের খাদ্যাভ্যাস গড়ে ২৩ শতাংশ রেকর্ড করেছিলেন।
আরও পড়ুন : মানুষের রক্তে মাইক্রোপ্লাস্টিক শনাক্ত
৬ মাস শেষে তাদের গড় সময় দাঁড়ায় ১৪.৬ মিনিটে। অর্থাৎ ৬ মাসে তারা দৈনিক ১৪.৬ বা ১৫ মিনিট ফুড জার্নালিং করেন। আর তাদের এই অভ্যাসই স্থূলতা কমাতে সাহায্য করেছে।