মহামারি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা কেউ জানে না। কিন্তু প্রতিনিয়ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই। সর্বশেষ হিসাবে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্ত প্রায় ২৯ লাখ।
সবশেষ ১৮ এপ্রিল করোনায় মৃতের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়ায়। সেই হিসাবে গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে প্রাণ গেছে আরও ৫০ হাজার মানুষের। আক্রান্ত ও মৃত্যুর উভয় দিক দিয়ে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। চীনে উৎপত্তি হলেও ইউরোপে প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকেই মৃত্যু ও আক্রান্ত দ্রুতই বাড়তে থাকে।
প্রাদুর্ভাব শুরুর পর এপ্রিলে করোনার মহামারি রুপ দেখতে শুরু করে বিশ্ববাসী। মোট ২ লাখ মৃত্যুর মধ্যে এপ্রিলের ২৫ দিনে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে। গত ২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো একদিনে ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ১০ এপ্রিল একদিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১০ হাজারের বেশি।
গত ১১ জানুয়ারি প্রথম মৃত্যুর পর মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াতে সময় লেগেছে ৮২ দিন। কিন্তু এরপর ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় মাত্র ৮ দিনে। আর মৃতের সংখ্যা ১ লাখ থেকে দেড় লাখ ছাড়াতে সময় লাগে মাত্র সাত দিন। এরপর আরও সাতদিনে মৃতের সংখ্যাটা এখন ২ লাখের বেশি হলো।
করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষ। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৯ লাখের বেশি। আর করোনায় যে ২ লাখ মানুষ মারা গেছে তার এক চতুর্থাংশ অর্থাৎ ৫২ হাজারে বেশি মানুষ মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। একদিনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়েও দেশটিরে ধারে কাছে কেউ নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায় মৃত্যুতে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ ইউরোপের। ইতালিতে ২৬ হাজার ৩৮৪, স্পেনে ২২ হাজার ৯০২, ফ্রান্সে ২২ হাজার ২৪৫, যুক্তরাজ্যে ২০ হাজার ৩১৯, বেলজিয়ামে ৬ হাজার ৯১৭, জার্মানিতে ৫ হাজার ৮০৫ ও নেদারল্যান্ডসে মারা গেছে ৪ হাজার ৪০৯ জন।
চীনে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৪ হাজার ৬৩২। তবে এশিয়ায় ৫ হাজার ৬৫০ মৃত্যু নিয়ে চীনের উপরে রয়েছে ইরান। তুরস্কে মারা গেছে ২ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ। এদিকে আক্রান্তের দিক দিয়ে চীন ও ইরানের উপরে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে এখন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার প্রায়।
এদিকে ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইন, জাপান ও বাংলাদেশসহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে করোনায় সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে। তবে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং ও তাইওয়ানের মতো দেশ ও অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণ অনেক কম।