প্রচ্ছদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী তেল-গ্যাস সিলেটের জকিগঞ্জে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত

সিলেটের জকিগঞ্জে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত

0
গ্যাসক্ষেত্র

সিলেটের জকিগঞ্জে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সোমবার (৯ আগস্ট) জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ‘এনার্জি সিকিউরিটি: মডার্ন কনটেক্সট, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন করে গ্যাস এক্সপ্লোরেশনের বিষয়ে আজ আমি বিশেষভাবে জানাতে চাই- জকিগঞ্জে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৬৮ বিসিএফ (৬৮ বিলিয়ন ঘণফুট) গ্যাসক্ষেত্র এর সন্ধ্যান আমরা পেয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘণফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যেখান থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যার মূল্য প্রায় এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমি বাপেক্সকে ধন্যবাদ জানাই, তারা দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করতে পেরেছে। এরসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আমি ধন্যবাদ জানাই। সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে জ্বালানি বিভাগের যে টিম এই কাজ করেছে তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।’

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘সেখানে থ্রিডি সার্ভে করব এবং সেটার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সেখানে আরও তিনটি কূপ খনন করতে যাচ্ছি।’

নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই সময় গ্যাসকে জাতীয়করণ করে সেই গ্যাসের উত্তম ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন। আমি মনে করি এটা একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল।’

‘তেলের ব্যবহার দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এখন পর্যন্ত এলপিজির মাধ্যমে ৭৫ শতাংশ আবাসিক জ্বালানি আমরা পূরণ করতে পারছি। জ্বালানিতে আরেকটু নিশ্চয়তার জন্য ইতোমধ্যে তেলের জন্য সিঙ্গেল মুরিং পাইপলাইন শেষ পর্যায়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন, সেটারও পথে আমরা আছি। এয়ারপোর্ট পর্যন্ত জেড ফুয়েল নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমরা তেলের টার্মিনালগুলো অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসছি।’

করোনার প্রথমদিকে গ্যাস ও তেলের দাম কমে গিয়েছিল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এরপরই কিন্তু দাম ঊর্ধ্বমুখী, অর্থাৎ বোঝা যাচ্ছে গ্যাসের ব্যবহার সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে। সে জন্য আমরা চেষ্টা করছি তেল ও গ্যাস কীভাবে মোর অ্যাফোর্ডেবল করা যায়, সাসটেইনেবিলিটি আরও বাড়ানো যায়। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি কীভাবে দেয়া যায়। এরমধ্যে কিন্তু আমাদের ইন্ডাস্ট্রি গ্রোথ বেড়েছে। প্রতিবছরই ৫ থেকে ৬ শতাংশ ইন্ডাস্ট্রি গ্রোথ কন্টিনিউ হচ্ছে। বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে।’

কোভিডকালে সর্বপ্রথম জ্বালানি বিভাগে ১০৫ শতাংশ এডিপি অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শক্তিশালী নেতৃত্ব ও টিমওয়ার্ক থাকলে সবকিছু সম্ভব। আমি আশাবাদী আগামী দিনগুলোতে আরও ভালো করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকগুলো বড় বড় প্রজেক্ট আসছে। নিরবচ্ছিন্ন ও সাশ্রয়ীমূল্যে জ্বালানি দিতেই এগুলোর মাধ্যমে কাজ করা হবে। ঢাকা শহরসহ আশেপাশের এলাকায় পুরোনো পাইপলাইনগুলো উঠিয়ে ফেলব। আমরা ডিস্ট্রিবিউশনগুলো আরও আপডেট করতে চাই। আমরা কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে যেতে চাই।’

‘ইতোমধ্যে রংপুর, পটুয়াখালী, খুলনা, যশোর থেকে আরম্ভ করে প্রত্যেকটি বড় শহরে গ্যাস কানেকটিভি তৈরি করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি।’ নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট করার জন্য ২৫ একরের মতো জমি হাতে নিয়েছি। এ জন্য জাইকা, এডিবিসহ অনেকের সাথে আলাপ করেছি।’

অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাইড্রোকার্বন ইউনিটের মহাপরিচালক এ এস এম মঞ্জুরুল কাদের। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version