প্রচ্ছদ শিল্প বানিজ্য অর্থনীতি আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিকল্প নেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে

আঞ্চলিক বাণিজ্যের বিকল্প নেই অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে

0

আঞ্চলিক বাণিজ্যের কোনো বিকল্প নেই, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে । করোনার প্রভাবে বিশ্বে বৈষম্য বেড়েছে। বৈষম্য থেকে রক্ষা এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানো হতে পারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ভালো বিকল্প। আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য সময় ও ব্যয়সাশ্রয়ী। ফলে বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাণিজ্যের সরবরাহ চেইনে এসব দেশ একে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারে। করোনাকাল ছাড়াও স্বাভাবিক সময়েও এই নীতি সহায়ক। ‘বিবিআইএন দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সহজ করতে বহুমুখী সংযোগ’ শিরোনামে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেছেন অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও ব্যবসায়ী নেতারা।

মঙ্গলবার অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় এবং ভারতের জয়পুরভিত্তিক কাটস ইন্টারন্যাশনালের যৌথ আয়োজনে আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সমন্বয়ের চেয়ারপারসন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক প্রমুখ।

ড. আতিউর রহমান বলেন, করোনাকালে অর্থনীতি এবং টিকাদানের ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলো এগিয়ে। এতে বৈশ্বিক বৈষম্য আরও বাড়ছে। এ সময় আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য খুব জরুরি। যাতে নিজেদের মধ্যে খুব সহজে আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সরবরাহ চেইন ঠিক রাখা যায়। নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর আর কোনো বিকল্প নেই। পৃথিবীর সব অঞ্চলের

আঞ্চলিক জোটের বাণিজ্যের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য সবচেয়ে কম। ড. আতিউর বলেন, আঞ্চলিক সংযোগ এবং বাণিজ্য নির্বিঘ্ন করতে অবকাঠামোতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ভূ-রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন প্রয়োজন রয়েছে।

আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্যে পণ্য পরিবহনে মাল্টিমোডাল বা বহুমুখী পরিবহনব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যোগাযোগ উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে তা নিয়ে কাজ করতে হবে। যাতে কম সময়ের ব্যবধানেই একটা সুফল আসে। পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদের পরিকল্পনাও নিতে হবে। এ জন্য নিয়মিত সংলাপ এবং বেশি বেশি গবেষণা প্রয়োজন।

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও এ পর্যন্ত আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সফল উদাহরণ নেই। দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে অনেক সাফল্যের কথা বলা যায়। দ্বিপক্ষীয় সাফল্যকে আঞ্চলিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। বিবিআইএনের মাধ্যমেই যা সম্ভব। আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াতে অবকাঠামো নিজ নিজ দেশকেই উন্নয়ন করতে হবে। প্রয়োজনে বিনিয়োগে বহুপক্ষীয় অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে, যাতে বিনিয়োগ করা অবকাঠামোর ব্যবহার করে সব দেশ। এই বিনিয়োগের মুনাফাও নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনেক বিনিয়োগ করা হয়েছে এরই মধ্যে। এ ক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর উদাহরণ দেন তিনি।

কাটসের ফেলো সুরেশ পি সিংহ বলেন, দুর্বল সংযোগের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্ভাবনা অনেক নিচে। করোনাকালে বিবিআইএনের চার দেশের সব করিডোর কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে বিষয়ে সমঝোতামূলক কৌশল নেওয়া প্রয়োজন।

প্রাণ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী বলেন, করোনার প্রভাবসহ বিভিন্ন কারণে আগামীতে আঞ্চলিক বাণিজ্য অনেক বেশি পরিমাণে বাড়বে বলে ধারণা করছেন তারা। এ সম্ভাবনায় প্রধান বাধা হতে পারে দুর্বল অবকাঠামো। সড়ক ও নৌপথের অবকাঠামো দুর্বলতা দূর করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, পণ্যবাহী এক দেশের পরিবহন অন্য দেশে কোনো বাধা ছাড়াই চলে যাচ্ছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এ রকম ক্ষেত্রে প্রতিটি কার্টন খুলে খুলে পরিদর্শন করা হয়। এ ধরনের বাজে ব্যবস্থা বন্ধ করতে হবে।

আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সহজীকরণের ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি করকাঠামোর সহায়ক ব্যবস্থাপনার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন নীলিমা আক্তার। কমডোর গোলাম সাদেক বলেন, বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের লিড ইকোনমিস্ট রবার্ট শুভ্র।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version