করোনার মহামারিতে বিশ্বব্যপী অর্থনীতি নিম্নের দিকে। এই সংকটকালে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে প্রবাসী আয়ে। গত তিন মাস প্রবাস থেকে বাংলাদেশিদের পাঠানো আয় অনেক কম। এর মধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নতুন রেকর্ড হয়েছে। প্রথমবারের মতো কেন্দ্রিয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
গতকাল বুধবার (৩ জুন) দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৪.২৩ বিলিয়ন ডলার। মূলত বিদেশি ঋণের কারণে রিজার্ভ এভাবে বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। করোনাভাইরাসের এই সময়ে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থার ঋণ যোগ হয়েছে, যে কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এভাবে বাড়ছে।
এর আগে ২০১৭ সালের ২২ জুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল । আর সর্বোচ্চ ৩৩.৬৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের রেকর্ড ছিল ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর। এরপর থেকে রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামা করছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে বিভিন্ন পণ্য আমদানির জন্য মাত্র ১৬০ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়। আগের বছরের একই মাসে খোলা হয় ৫২৬ কোটি ডলার। আর গত মার্চে খোলা হয় ৪৯৭ কোটি ডলার। এ হিসেবে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় এপ্রিলে এলসি খোলা কমেছে ৩৬৬ কোটি ডলার বা প্রায় ৭০ শতাংশ। আর আগের মাস মার্চের তুলনায় কমেছে প্রায় ৬৮ শতাংশ। গত এপ্রিলে মাত্র ৫২ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের বছরের একই মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩০৩ কোটি ডলার।
এ হিসেবে রপ্তানি আয় কমেছে ৮৩ শতাংশ। কমছে রেমিট্যান্স। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় গত মে মাসে রেমিট্যান্স ২৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার কমে ১৫০ কোটি ডলার হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে কমেছিল ৩৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২৪.২৭ শতাংশ। আর বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাব ব্যাপকভাবে শুরু মাস মার্চে রেমিট্যান্স ১৮ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ১২.৪৮ শতাংশ কমে ১২৭ কোটি ৭৬ লাখ ডলার হয়।
এর আগের মাস ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্সে প্রবৃদ্ধি ছিল ২০.২০ শতাংশ। শুধু বিদেশি ঋণের কারণে রিজার্ভ এভাবে বাড়ছে।