চীনের উহান শহরে আবার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে এবার করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। ওই শহরে বসবাসকারী এক কোটি ২০ লাখ মানুষের সবাইকে করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করা হবে বলে, কর্তপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে। এই শহরেই ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। তারপর কঠোর লকডাউন দিয়ে অন্য দেশগুলোর তুলনায় দ্রুততার সঙ্গে এবং কার্যকরভাবে ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই শহরে নতুন করে উচ্চ মাত্রায় সংক্রমণশীল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। সোমবার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, এই শহরে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর মে মাসের পর এটাই সেখানে প্রথম স্থানীয় পর্যায়ে সংক্রমণ।
অনলাইন ফোরবস ম্যাগাজিনে বলা হয়, উহান শহরের একজন কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তিনি বলেছেন, লক্ষণ দেখা যায়নি এমন সংক্রমণ শনাক্ত করার জন্য ব্যাপকভিত্তিক পরীক্ষা করা হয়েছে ওই শহরে। এর মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, শহরের প্রতিজন মানুষের জীবন নিরাপদ।
উহান ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে পার্শ্ববর্তী শহর জিংঝাও এবং হুয়াংগাংয়ে। এসব সংক্রমণের সঙ্গে চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সংক্রমণের সম্পর্ক আছে। জিয়াংসু প্রদেশে সংক্রমণ বেড়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে। ধারণা করা হচ্ছে, রাশিয়া থেকে ফ্লাইটে এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে চীনে প্রবেশ করেছে এই ভ্যারিয়েন্ট।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন (এনএইচসি) রিপোর্ট করেছে, মঙ্গলবার সেখানে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯০ জন। এর মধ্যে ৬১ জন আক্রান্ত হয়েছেন স্থানীয় পর্যায়ে। ২০১৯ সালে উহান থেকে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে চীনে এতে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৩,১৯৩ জন। মারা গেছেন ৪৬৩৬ জন। করোনা প্রাদুর্ভাব শুরুর পর পরই দেশটি স্থানীয় পর্যায়ে কঠোর লকডাউন দেয়। এই লকডাউন এমনই ছিল যে, সেখানে বাতাস, আলো আর পাখি ছাড়া আর কোনো প্রাণি চলাচল করতে পারতো না। রাস্তাঘাট ছিল বিরানভূমি। এর সুফলও পায় চীন। ফলে মাত্র ৪৬৩৬ জন মানুষ মারা যায়। অন্যদিকে বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ব্রাজিল, ইউরোপের কিছু দেশে মৃতের সংখ্যা কয়েক লাখ ছাড়িয়ে যায়।