পদ্মা সেতু প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হলেও এর সঙ্গে ব্যয় বাড়ানোর কোনো আবেদন করা হয়নি। পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) ইতোমধ্যে এ আবেদনের পক্ষে সুপারিশও করেছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেনা-পাওনা বুঝিয়ে দিতে আরও এক বছর পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া আরও দুই বছর সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
পদ্মা সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমইডির সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করে প্রকল্পের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন তিনি।
সচিব বলেন, প্রকল্প পরিচালক এবং প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য কর্মকর্তা জানান, প্রকল্প এলাকায় এখন প্রায় ৪ হাজার দেশি-বিদেশি জনবল প্রকল্পের কাজে জড়িত রয়েছেন। কোভিডের কারণে প্রকল্পের বিদেশি শ্রমিক এবং পরামর্শক সেবা ব্যাহত হওয়ায় কিছু সময় প্রকল্পের অগ্রগতি আশানুরূপ হয়নি।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, এই প্রকল্পের মোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা এবং চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ২৪ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮১.২৫ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ। প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্পের বাকি কাজ সমাপ্ত করার জন্য ডিফেক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ডসহ ৩০ জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
আইএমইডির সুপারিশে যা বলা হয়েছে
মূল সেতু ও নদীশাসন কাজসহ অবশিষ্ট কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৩০ জুন ২০২২ পর্যন্ত এক বছর এবং দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী রক্ষণাবেক্ষণ কাজ ও ঠিকাদারদের দেনা পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য আরও এক বছরসহ কিছু সুপারিশ/মতামত প্রতিপালন সাপেক্ষে প্রকল্পটির ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ (৩য় বার) জুন ২০২৩ পর্যন্ত নির্ধারণ করা যেতে পারে।
বিভিন্ন অঙ্গভিত্তিক কাজ নির্ধারিত মেয়াদে সমাপ্তের লক্ষ্যে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং নিয়মিত ফলোআপ সভা করে বাস্তবায়ন অগ্রগতি মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় গৃহীত আয়বর্ধকমূলক কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করাসহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ যাতে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হতে পারে, সে লক্ষ্যে জব প্লেসমেন্টের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করা যেতে পারে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় ডিপিপির সংস্থান অনুযায়ী জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশগত উৎকর্ষতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
প্রকল্পের কারিগরি ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বর্তমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে এবং উপরোক্ত সুপারিশের আলোকে গৃহীত ব্যবস্থার তথ্য আগামী এক মাসের মধ্যে আইএমইডিকে অবহিত করতে হবে।