পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু করেছে। বিদ্যুত কেন্দ্রটির উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে বিদ্যুত কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে।
সরকারের মেগা বিদ্যুত প্রকল্পর মধ্যে এটিই প্রথম কোন প্রকল্প যা বাণিজ্যিক বিদ্যুত উৎপাদন করলো। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর খবরে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ করোনার এই পরিস্থিতিতেও বিসিপিসিএলের কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা প্রতিশ্রুত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে আন্তরিকভাবে কাজ করছি। তিনি বলেন, দেশের সব থেকে বড় বিদ্যুত কেন্দ্রটি করোনার প্রকোপের মধ্যেও উৎপাদনে আসায় প্রমাণ হয়েছে উন্নয়নের গতি থেমে নেই। রাষ্ট্রীয় নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (বাংলাদেশ) চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট এ্যান্ড ইমপোর্ট কোম্পানির (সিএমসি) যৌথ উদ্যোগে গঠিত পটুয়াখালীর পায়রায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লা চালিত তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। চীনের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত এই কেন্দ্রর অর্ধেক মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশে সরকারের রাষ্ট্রীয় একটি কোম্পানির হাতে।
কেন্দ্রটি দেশের সব থেকে বড় বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র। এর প্রথম ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। চলতি বছর জুনের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটেরও উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। যদিও করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে এটি কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। জানতে চাইলে বিসিপিসিএলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এম খোরশেদুল আলম বলেন, কেন্দ্রটি এত দিন পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন করছিল। এখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে। তিনি বলেন, করোনার কারণে আমাদের কাজে অনেক বেগ পেতে হলেও আমরা থেমে থাকিনি। আমরা চেষ্টা করেছি এই দুঃসময়ে সারা দেশের মানুষকে একটি ভাল খবর দিতে। আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তিতে কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।
পৃথিবীর সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তির ব্যবহার বাংলাদেশেই প্রথম নয় দক্ষিণ এশিয়াতেও প্রথম। ভারতের বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো সুপার ক্রিটিক্যাল সেখানে বাংলাদেশের এই কেন্দ্রটি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল। গত ১৩ জানুয়ারি ২০২০ এ বিদ্যুত কেন্দ্রটি জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুত সরবরাহ শুরু করে। এরপর থেকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কেন্দ্রটিকে যেতে হয়েছে। সবশেষ বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসার পরীক্ষায়ও কেন্দ্রটি সফল ভাবে উতরেগেছে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট হলেও এটি থেকে ৬৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হয়েছে।