প্রচ্ছদ বিদ্যুৎ ও জ্বালানী বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলো

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলো

0
প্রজ্ঞাপন জারি

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলো টানা দুই সপ্তাহ ধরে । গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে বড় পতন হয়েছে। এক সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। আর ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল ও হান্টিং অয়েলের দাম কমেছে সাড়ে ৪ শতাংশের ওপর। এতে এক মাসের মধ্যে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি বিশ্ববাজারে এখন জ্বালানি তেলের দাম সাত সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে।

বিশ্ববাজারে তেলের এ দরপতনের আগে টানা দাম বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। দফায় দফায় দাম বেড়ে চলতি বছরের অক্টোবরে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৮৪ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মাধ্যমে সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে উঠে আসে তেল।

বিশ্ববাজারে তেলের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ নভেম্বর দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ায় সরকার। ওইদিন রাতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়িয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ তেলের দাম সমন্বয় করছে। গত ১ নভেম্বর ভারতে ডিজেলের বাজারমূল্য লিটারপ্রতি ১২৪ দশমিক ৪১ টাকা বা ১০১ দশমিক ৫৬ রুপি ছিল। বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৬৫ টাকা অর্থাৎ ৫৯ দশমিক ৪১ টাকা কম।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ডিজেলে লিটারপ্রতি ১৩ দশমিক শূন্য ১ টাকা কমে বিক্রি করছে। অন্যদিকে ফার্নেস অয়েল বিক্রি করছে লিটারপ্রতি ৬ দশমিক ২১ টাকা কমে। এতে প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে বিপিসি। অক্টোবর মাসে বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্য বর্তমান দামে সরবরাহ করায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মোট ৭২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গাড়ি ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে। দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার সমালোচনা করা হচ্ছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে। সেই সঙ্গে গাড়ি ভাড়া বাড়ানোরও সমালোচনা করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে ৬ নভেম্বর এক ভার্চুয়ালি ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও দাম কমানো হবে। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়নি। আমরা জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করেছি। ভারতসহ সারা বিশ্বে মূল্যবৃদ্ধি এবং পাচার ঠেকাতেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অবশ্য বাংলাদেশে দাম বাড়ার পরপরই বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার প্রবণতা দেখা দেয়। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেল ও ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ১ শতাংশ কমে। গত সপ্তাহে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। এর মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কমেছে ৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। মাসের ব্যবধানে কমেছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এতে প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৭৬ দশমিক ১০ ডলারে নেমে গেছে। অবশ্য বছরের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এখনো ৫৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি।

অপরিশোধিত তেলের পাশাপাশি ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলও গত সপ্তাহ বড় দরপতনের মধ্যে পড়ে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ৩ দশমিক ৪৩ ডলার কমে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৮ দশমিক ৪৫ ডলার। এতে গত এক সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম কমেছে ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। মাসের ব্যবধানে কমেছে ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তবে বছরের ব্যবধানে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম এখনো ৫১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।

অন্যদিকে গত এক সপ্তাহে ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ কমে প্রতি গ্যালন হান্টিং অয়েলের দাম ২ দশমিক ২৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এর মাধ্যমে মাসের ব্যবধানে হান্টিং অয়েলের দাম কমেছে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। তবে বছরের ব্যবধানে হান্টিং অয়েলের দাম এখনো ৫৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version