গত শতকের সত্তর ও আশির দশকের তুলনায় এখন তিনগুণ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে মানুষ। ৫০ বছর আগের চেয়ে বিশ্বে দুর্যোগ বেড়েছে তিনগুণ। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশ্ববাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলছে করোনা মহামারি, বন্যা, খরা, দাবানল ও পঙ্গপালের হানাসহ নানা দুর্যোগ। এসব দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি খাত।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে গত বছর বিরূপ আবহাওয়া, দাবানল ও পঙ্গপালের আক্রমণের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিয়েছে ভয়াবহ আকারে।
এসব দুর্যোগে কৃষিজাত খাদ্য ব্যবস্থার যে ক্ষতি হয়েছে, তা ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। এত ঘন ঘন, তীব্র ও জটিল আকারের দুর্যোগ আগে ছিল না। দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাবের ৬৩ শতাংশই কৃষি খাতের ওপর পড়ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, দুর্যোগের কারণে কৃষিভিত্তিক জীবিকা বিপর্যস্ত হচ্ছে। গৃহস্থালি থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত তার প্রভাব পড়ছে। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে এর জন্য ভুগতে হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বল্পোন্নত এবং নিু ও মধ্য আয়ের দেশগুলোই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৮ সালে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শস্য ও প্রাণিসম্পদ নষ্ট হয়ে ১০৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এশিয়া, চার হাজার ৯০০ কোটি ডলার। এরপর আফ্রিকায় ৩ হাজার কোটি ডলার এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি উৎপাদন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খরায়। এর পর বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বন্যা, ঝড়, কীটপতঙ্গ, রোগবালাই এবং দাবানলে।
নির্দিষ্ট মৌসুমে ঠিকমতো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় শস্য ও প্রাণিসম্পদ উৎপাদন ৩৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর জীববৈচিত্র্যের বিপর্যয়ে ক্ষতি হয়েছে ৯ শতাংশ।
এর মধ্যে কোভিড-১৯ মহামারি বিদ্যমান সমস্যাগুলোকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এসব ক্ষতি সামলে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জনে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।