প্রচ্ছদ বিশেষ খবর রাজধানীতে কখন কোথায় ঈদের জামাত

রাজধানীতে কখন কোথায় ঈদের জামাত

0

আগামীকাল বুধবার মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। গতবারের মতো এবারও অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কার মধ্যেই এ উৎসব উদযাপন করবেন মুসলমানরা।

মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস থাকার কথা, তা ম্লান করে দিয়েছে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। বাংলাদেশে ঈদ পালনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

করোনা মহামারি শুরুর পর গত তিন ঈদে ঈদগাহে কিংবা খোলা মাঠে জামাতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবার তা শিথিল করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে শর্তসাপেক্ষে ঈদগাহ মাঠে জামাতে নামাজ আদায় যাবে।

অনুমতি না মিললে ঈদের জামাত হবে মসজিদের ভেতরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি এবং হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় ঈদের জামাত বিষয়ে ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে।

তবে করোনার কারণে গত তিনটি ঈদের ন্যায় এবারও হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হচ্ছে না। হচ্ছে না শত বছরের ঐতিহ্য ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানের ঈদ জামাতও।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ বড় বড় মসজিদগুলো এরইমধ্যে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে। মসজিদের ইমাম ও খাদিমরা জানিয়েছেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে, সেজন্য সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের নামাজের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটি জামাতে মুসল্লিরা যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করতে পারেন সেজন্য একটি কাতার বাদ দিয়ে অন্য কাতারে নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মসজিদের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার থাকবে। অজুখানায় পর্যাপ্ত পানি ও সাবান রাখা হবে। নামাজ আদায়ে যারা আসবেন, তারা যেন মাস্ক পরে মসজিদে প্রবেশ করেন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সে আহ্বান জানিয়েছে ফাউন্ডেশন।

বায়তুল মোকাররমে ঈদের পাঁচ জামাত

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

প্রথম জামাত : সকাল সাতটা

প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান, মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. আতাউর রহমান।

দ্বিতীয় জামাত : সকাল আটটা

দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান।

তৃতীয় জামাত : সকাল নয়টা

তৃতীয় জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক, মুকাব্বির থাকবেন মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারী হাবিবুর রহমান মেশকাত।

চতুর্থ জামাত : সকাল ১০টা

চতুর্থ জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহিউদ্দীন কাসেম। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারী মো. ইসহাক।

পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত : সকাল ১০টা ৪৫ মিনিট

শেষ জামাতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান। তার সঙ্গে মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. শহীদুল্লাহ।

এ পাঁচটি জামাতে কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ।

ঢাবিতে ঈদের নামাজের সময়সূচি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে সকাল আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন মসজিদের সিনিয়র ইমাম খতিব ড. সৈয়দ মুহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল জামে মসজিদে সকাল আটটায় এবং ফজলুল হক মুসলিম হল মসজিদে সকাল আটটায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রতিবছর ঈদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হলেও করোনার কারণে গত বছর থেকে শুধুমাত্র একটি জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রাজধানীর অন্যান্য স্থানে কখন কোথায় জামাত

এদিকে রাজধানীর গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদে তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ছয়টা, সাড়ে সাতটা এবং সাড়ে নয়টায় এসব জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পুরান ঢাকার চকবাজার শাহী মসজিদে সকাল আটটা ও নয়টায় দুটি জামাত হবে। বড় কাটারা মাদরাসা মসজিদে একটি ঈদ জামাত হবে সকাল আটটায়। লালবাগ শাহী মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় একটি জামাত হবে।

ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে সকাল সাড়ে সাতটা ও সকাল নয়টায়; ধানমণ্ডির বায়তুল আমান মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায়; ঈদগাহ মাঠ মসজিদে আটটায় এবং সোবহানবাগ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদ জামাত হবে।

আজিমপুর কবরস্থান মসজিদে সকাল সাতটা, আটটা, নয়টা ও ১০টায় মোট চারটি জামাত হবে। মিরপুর দারুস সালাম লালকুঠি বড় মসজিদে সকাল সাতটায় একটি জামাত হবে।

পুরান ঢাকা তারা মসজিদে সকাল সাড়ে আটটা ও নয়টায়, রায়সাহেব বাজার জামে মসজিদে সাড়ে আটটায়, নিমতলী ছাতা মসজিদে সকাল আটটা ও নয়টায়, আগামছি লেন জামে মসজিদে সকাল সাড়ে সাতটা ও সাড়ে আটটায় এবং বায়তুল মামুর জামে মসজিদে সকাল সোয়া আটটা ও নয়টায় ঈদের জামাত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া মহাখালীর মসজিদে গাউসুল আজমে তিনটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।

করোনার কারণে এবারও ঈদ জামাত আয়োজনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিকতা নেই। তবে দুই সিটির মেয়র নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত হচ্ছে না

করোনার সংক্রমণ এড়াতে এবারও দেশের ঐতিহাসিক ঈদগাহ ময়দান শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাত হচ্ছে না। কিশোরগঞ্জ কালেক্টরেট ভবনে অনুষ্ঠিত ১৯৪তম ঈদুল আজহার প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার এ সিদ্ধান্ত হয়।

তবে শহরের সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ ও মসজিদের প্রাঙ্গণজুড়ে। এখানে সকাল সাড়ে সাতটা, সোয়া আটটা ও সকাল নয়টায় পরপর তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এবার জেলার ১৩ উপজেলার ৬ হাজার ৬৩৮টি মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version