সাভারের ট্যানারিপল্লির ১৯টি ট্যানারি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য কোনো আবেদন না করায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসব ট্যানারির কারণে নদীদূষণ ছাড়াও জীববৈচিত্র্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, তানভীর শাকিল জয়, জাফর আলম এবং খোদেজা নাসরিন আক্তার অংশ নেন।
এছাড়া আদালতের দেওয়া শর্ত পূরণসহ কমপ্লায়েন্স অর্জন করেছে এমন ১৯টি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নবায়ন এবং ছাড়পত্রের জন্য আবেদিত ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে শর্তসাপেক্ষে ৬ মাসের জন্য ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
কমিটির আগের বৈঠকে যেসব ট্যানারি ছাড়পত্রের জন্য কোনো আবেদন করেনি এবং আইনকে তোয়াক্কা করছে না এমন প্রতিষ্ঠানের গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, যে ১৯টি প্রতিষ্ঠান কখনোই পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেনি সেগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আদালতের দেওয়া শর্ত পূরণ করার জন্য ১৯টি ট্যানারির ছাড়পত্র নবায়ন ও আবেদন করা ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে শর্ত অর্জনের শর্তে অস্থায়ী ভিত্তিতে ছাড়পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আবেদন না করার কারণে যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেগুলো হলো- মেসার্স নিশাত ট্যানারি, ইব্রাহীম ট্যানারি, মেসার্স সিটি লেদার, মেসার্স সবুজ করপোরেশন, মেসার্স এম এ লেদার, মেসার্স মেট্রো ট্যানারি, মেসার্স মুন ট্যানারি, মেসার্স লিয়েন এন্টারপাইজ, মেসার্স ইন্টারন্যাশনাল ট্যানারি, মমতাজ ট্যানারি, জিন্দাবাদ ট্যানারি, মেসার্স গোল্ডেন লেদার ইন্ডা, জামান ট্যানারি, মেসার্স সাহী ট্যানারি, ফালু লেদার করপোরেশন, হাইটেক লেদার, ইসমাইল লেদার, এস অ্যান্ড এস ট্যানারি, মেসার্স জহির ট্যানারি।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-বৈঠকে বন্য প্রাণী পাচার রোধে বিদ্যমান আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং পাচার রোধে ট্রানজিট ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে কমিটির পক্ষ থেকে প্রচলিত আইনের আওতায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা জোরদার করার প্রতি অধিক সতর্ক থাকার সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে কক্সবাজারে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা, বিশেষ করে সংরক্ষিত বনাঞ্চল রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধে আরও কঠোর হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার সহায়তা প্রত্যাশা করা হয়। এছাড়া সেন্টমার্টিনে নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্রকার হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ইত্যাদি পরিবেশ দূষণকারী প্রতিষ্ঠানকে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য নোটিশ দেওয়াে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বৈঠকে আসন্ন কপ-২৭ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাস্তবায়িত কার্যক্রমসমূহ উক্ত প্যাভিলিয়নে প্রদর্শন ও প্রচারের বিষয়ে বিভিন্ন সাইড ইভেন্ট আয়োজনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়।