প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর মিছিল দিন দিন বাড়ছেই। কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না বরং আরও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি। মঙ্গলবার (৩ মার্চ) সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মহামারি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ১২৫ জনে পৌঁছেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, উৎপত্তিস্থল চীনে নতুন করে ৪ শতাধিক লোক ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে।
এ দিকে বিবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের অন্তত ৭৬টি দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। ঝুঁকিতে আছে আরও অনেক দেশ। এ অবস্থায় বিশ্বজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
অপরদিকে করোনা আতঙ্কে বিশ্বের ১০টিরও অধিক রাষ্ট্রের লাখ লাখ শিশুর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি চীনজুড়ে স্কুল বন্ধ রাখায় দেশটির প্রায় দুই কোটি শিশু গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে।
বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।
এছাড়া এ তালিকায় আরও রয়েছে ভারত, কাতার, চেকপ্রজাতন্ত্র, জর্জিয়া, আইসল্যান্ড, রুমানিয়া, বেলজিয়াম, ব্রাজিল, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, আফগানিস্তান, আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাম্বোজ, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, আয়ারল্যান্ড, লিত্ভা, লুক্সেমবার্গ, উত্তর ম্যাসেডোনিয়া, মোনাকো, নেপাল, নিউজিল্যান্ড, নাইজেরিয়া ও শ্রীলংকা।
এমনকি সিঙ্গাপুরেও কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।