প্রচ্ছদ ব্যাংক-বিমা বাংলাদেশ ব্যাংক এমডিদের অনুরোধ আমানতের সুদহার কমানো, নাকচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

এমডিদের অনুরোধ আমানতের সুদহার কমানো, নাকচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

0

এমডিদের অনুরোধ নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তফসিলি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকগণ আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার কমাতে অনুরোধ করেন।

বুধবার (১১ আগস্ট) ব্যাংকগুলোর এমডিদের সঙ্গে ব্যাংকার্স সভায় এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনা মহামারির কারণে সাড়ে ছয় মাস পর এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এমডিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে   এ সভায় যোগ দেন। সভায় ঋণের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়নের অগ্রগতি, মেয়াদি আমানতে মূল্যস্ফীতির কম সুদ না দেয়ার নির্দেশনা প্রত্যাহার বা পরিমার্জন, ঋণ ও আমানত উভয়ক্ষেত্রে সুদহারের সীমা তুলে দেয়ার দাবিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

সভায় অংশ নেয়া একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমানতের সুদহার কমানোর জন্য কয়েকজন ব্যাংকের এমডি অনুরোধ জানালে বৈঠকে সুদহার না কমানোর যুক্তি তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এছাড়াও মোবাইল-ল্যাপটপ কেনার জন্য ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়ার বিষয়ে জানতে চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এ খাতটি এতদিন অনুৎপাদনশীল খাত হিসেবে দেখলেও এখন থেকে উৎপাদনশীল খাত হিসেবে দেখতে বলেছেন গভর্নর। এছাড়াও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ শতভাগ বাস্তবায়ন করায় ১৫টি ব্যাংককে প্রশংসাপত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা আমানতের সুদ কমানোর অনুরোধ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক আমানতের সুদ বহাল রাখতে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি দেয়া নির্দেশনাই বহাল রাখে।

সভায় করোনার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলোর বিশেষ সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও প্রণোদনার আওতায় দ্বিতীয় বছরে বড় শিল্পে ৩৩ হাজার কোটি টাকা ও সিএমএসএমই খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়।

একই সঙ্গে সিএমএসএমই খাতে প্রথম বছর ১৫ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা বিতরণ হয়েছে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এক্ষেত্রে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনকারী ১৬টি ব্যাংক ও ৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে প্রশংসাপত্র দেয়া হবে। আর ৪০ শতাংশের কম বিতরণ করা ব্যাংকগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মামলা না থাকা স্বীকৃতি বিল যথাসময়ে পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে আগে থেকে নির্দেশনা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অধিকাংশ ব্যাংকের অপরিশোধিত স্বীকৃতি বিল পরিশোধ করলেও এখনো ২৮টি ব্যাংকের বকেয়া রয়েছে। এ নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।

সভায় নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও স্ব-কর্মসংস্থান উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দুটি স্টার্টআপ তহবিল গঠন নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক মাত্র চার শতাংশ সুদ বা মুনাফায় জামানতবিহীন ‘স্টার্টআপ’ অর্থায়নের উদ্দেশ্যে দুটি ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ গঠন করবে। একটি ‘স্টার্টআপ ফান্ড’ নামে পাঁচশ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল এবং তফসিলি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক তাদের বাৎসরিক নিট মুনাফা হতে ১ শতাংশ অর্থ স্থানান্তরপূর্বক নিজস্ব ‘স্টার্টআপ ফান্ড’।

এছাড়াও প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট খাতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রি-শিপমেন্ট রফতানি ঋণ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের রফতানি কার্যক্রম অব্যাহত রেখে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ হাজার কোটি টাকার তিন বছর মেয়াদী আবর্তনযোগ্য তহবিল গঠন করতে আলোচনা করা হয়।

শেয়ার করুনঃ

কোন মন্তব্য নেই

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

Exit mobile version