জাপান দুটি বিনিয়োগ প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা বাবদ বাংলাদেশকে ২৬৬ কোটি ডলার ঋণ দেবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। ৪২তম ইয়েন লোন প্যাকেজের আওতায় এ ঋণ দেবে জাপান। গতকাল দুই পক্ষের মধ্যে এ–সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি সই হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন। আর জাপানের পক্ষে সই করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি। এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনলাইনে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইয়োহো হায়াকাওয়া সশরীর উপস্থিত ছিলেন।
জাপানের দেওয়া এ ঋণের সুদের হার শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে বাংলাদেশ এ ঋণ পরিশোধ করতে পারবে। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে মেট্রোরেল, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো বড় বড় প্রকল্পের অংশীদার জাপান। দেশটি বাংলাদেশের পরীক্ষিত অকৃত্রিম বন্ধু। বঙ্গবন্ধুর ১৯৭৩ সালের ঐতিহাসিক জাপান সফরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
যে দুটি প্রকল্পে বাড়তি অর্থায়নের ঋণ চুক্তি সই হয়েছে, তার একটি হলো কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। নতুন করে এ প্রকল্পের জন্য ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে জাপান। অন্য প্রকল্প হলো মেট্রোরেল রুট ওয়ান। এ প্রকল্পটি দুটি অংশে বিভক্ত। একটি অংশ বিমানবন্দর রুট (বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর) অন্যটি পূর্বাচল রুট (নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ)। এ প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশে প্রথম মাটির নিচে মেট্রোরেলের পথ তৈরি হতে যাচ্ছে। এ প্রকল্পে নতুন করে ১১০ কোটি ডলার ঋণ দেবে জাপান।
আরও পড়ুন : বেসরকারি খাতে ১৪.৮ শতাংশ ঋণ বাড়ানোর লক্ষ্যে নতুন মুদ্রানীতি
এ ছাড়া করোনায় অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাজেট সহায়তা বাবদ ৩৬ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে জাইকা। সব মিলিয়ে ২৬৬ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এ কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো কার্যকর স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাস্তবায়ন, করোনা অতিমারি–সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী জানান, অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা হিসেবে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে জাপান।
ইআরডির সচিব বলেন, যমুনা নদীর ওপর রেলসেতু, ঢাকা শহরের মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরসহ চলমান বেশ কয়েকটি প্রকল্পে জাপান সরকার ঋণ দিচ্ছে।