অনেকেই প্রস্রাব আটকে রাখতে পারেন না। সামান্য হাঁচি-কাশিতেও প্রস্রাব পড়ে যায় বা সামান্য চাপে হঠাৎ প্রস্রাবের ফোঁটা বেরিয়ে আসে। নারীদের এই সমস্যা অনেক ভোগায়; বিশেষ করে সন্তান প্রসবের পর পেলভিসের পেশি দুর্বল হয়ে পড়লে বা জরায়ু নিচে নেমে এলে। অনিয়ন্ত্রিত প্রসাব হওয়ার কারনে বার বার কাপড় নোংরা হয়। টয়লেটে যাওয়ার আগে যদি প্রসাব হয়ে যায় তবে তা অনেক বিড়ম্বনার কারন। এটি আসলে মূত্রাশয় বা মূত্রনালির অসুখের লক্ষণ। হঠাৎ মূত্রথলি সংকুচিত হতে শুরু করলে কিংবা যখন সংকুচিত হওয়ার কথা নয়, তখন মূত্রথলি প্রস্রাবে পূর্ণ হয়ে গেলে প্রবল চাপে প্রস্রাব বেরিয়ে আসে।
এ ধরনের সমস্যা পুরুষদেরও হয়। একটু বয়স্ক পুরুষেরা এ ধরনের সমস্যায় বেশি পড়েন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটা হয় প্রস্টেটগ্রন্থি বড় হয়ে মূত্রথলিতে চাপ দেওয়ার কারণে। অনেক সময় স্নায়ুগত কারণে মূত্রথলির ধারণক্ষমতায় বা সংবেদনশীলতায় সমস্যার কারণেও এমনটি হয়।
এ ছাড়া মূত্রথলি ঘিরে থাকা পেশি ঠিকমতো কাজ না করলেও প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে। মূত্রথলিতে প্রস্রাবের চাপ বাড়লে পেশি শিথিল থাকায় মূত্রথলি প্রস্রাব আটকে রাখতে পারে না। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ সমস্যা দেহের অন্য কোনো রোগের কারণেও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই রোগের চিকিৎসা করালে এ সমস্যাও সমাধান হয়ে যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
কোনো রকম আঘাতের কারণে মূত্রথলির চারপাশের পেশি আঘাতপ্রাপ্ত হলে কিংবা কার্যক্ষমতা হারালে। নারীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় কিংবা ওজন বাড়ার কারণে পেটের নিচের পেশিগুলো শিথিল হয়ে পড়লে, পেশিগুলো মূত্রথলি ঠিকমতো ধরে রাখতে না পারলে।
এ ছাড়া স্ট্রোক, প্রস্টেট বা মূত্রথলির ক্যানসার, পার্কিন্সন্স ডিজিজ, কোনো অসুখের কারণে মূত্রথলি ছোট হয়ে গেলে বা প্রস্টেট বড় হয়ে গেলে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
চিকিৎসা: ওষুধ, ব্যায়াম এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।
প্রতিরোধ: ধূমপানকে না বলুন। অতিরিক্ত মদ্যপান, কফি পান থেকেও বিরত থাকুন। অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা, কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি। অনেকে বিশেষ করে মহিলারা প্রস্রাব আটকে রাখেন। এ ধরনের অভ্যাস থেকেও এ রোগ হতে পারে। তাই এ ধরনের অভ্যাস ত্যাগ করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু শতকরা পাঁচ ভাগ ওজন কমাতে পারলে স্ট্রেস ইনকন্টিনেন্সের ৫০ শতাংশ উন্নতি ঘটে।