নানান রঙের জরি লাগিয়ে রঙিন করা হয়েছে রাজধানীর তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জার (পবিত্র জপমালা রানীর গির্জা) ভেতরের প্রাঙ্গণ। গির্জা ও এর আশপাশে জ্বালানো হয়েছে রঙিন বাতি। ভেতরে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। বিশেষ প্রার্থনায় যোগ দিতে শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান বয়সীরা এসেছেন। চারদিকে উৎসবমুখর পরিবেশ। এ উৎসব বলছে সোমবার শুভ বড়দিন।
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দিন শুভ বড়দিন। তবে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা রোববারও নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন। সোমবার সারা দিন আনন্দ-উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তাঁরা দিনটি উদ্যাপন করবেন। সোমবার সরকারি ছুটির দিন। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিষ্টান পরিবারে কেক তৈরি হবে, থাকবে বিশেষ খাবারের আয়োজন। দেশের অনেক অঞ্চলে কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর বসবে।
২ হাজার ১৭ বছর আগে এই দিনে ফিলিস্তিনের বেথলেহেম শহরে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, ঈশ্বরের অপার মহিমা ও মানবজাতিকে পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য যিশুখ্রিষ্টের জন্ম হয়েছিল। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্ট ধর্মানুসারীরাও আজ নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে দিনটি উদ্যাপন করবেন।
বড়দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে জমকালো সজ্জায়। যিশুর জন্ম হয়েছিল গোয়ালঘরে। সেই স্মৃতিকে স্মরণ করে বড়দিনে গির্জাগুলোতে প্রতীকী গোয়ালঘর তৈরি করা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে গির্জা, পাঁচতারা হোটেলগুলোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ি ক্রিসমাস ট্রি, রঙিন বল, জরিতে সাজানো হয়েছে এবং আলোকসজ্জিত করা হয়েছে। সারা দেশে বড়দিন উপলক্ষে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
তেজগাঁও ক্যাথলিক গির্জার (পবিত্র জপমালা রানীর গির্জা) ফাদার কমল কোড়াইয়া প্রথম আলোকে বলেন, রোববার (গতকাল) দুই দফায় প্রার্থনা হয়েছে। বড় দিনে তিন দফায় প্রার্থনা হবে। এবারের প্রার্থনার মূল ভাবনা শান্তি ও সহাবস্থান। বাংলাদেশে এসে পোপ ফ্রান্সিস বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে শান্তি ও সহাবস্থানের যে বাণী শুনিয়েছেন, তা বড়দিনের প্রার্থনাতেও থাকছে।
বড়দিন উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সুখী-সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, বড়দিন দেশের খ্রিষ্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান সৌহার্দ্য সম্প্রীতিকে আরও সুদৃঢ় করবে।
বড়দিন উপলক্ষে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীসহ দেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্মল রোজারিও এবং মহাসচিব হেমন্ত আই কোড়াইয়া, বাংলাদেশ ছাত্র যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, প্রশান্ত কুমার বড়ুয়া, ইউলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার ও সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল।