এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পুঁজিবাজার লেনদেন শুরু হয়েছে সোমবার। ঘণ্টা বাজিয়ে লেনদেন শুরুর প্রথমদিনেই ‘টপগেইনারের’ তালিকায় উঠে আসে ব্যাংকটির নাম। দিনশেষে ব্যাংকটির শেয়ারমূল্য ৩২ শতাংশ বেড়েছে। গড়ে ১৩ টাকা ২০ পয়সা মূল্যে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে প্রায় ৪ কোটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দীর্ঘ ১২ বছর পর কোন ব্যাংক বাজারের তালিকাভ’ক্ত হয়ে লেনদেন শরু করল।
সোমবার সকালে রাজধানীর নিকুঞ্জে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ঘন্টা বাজিয়ে লেনদেন শুরু করা হয়। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মতিন পাটোয়ারী, ব্যাংকের চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, পরিচালক এ এম সাইদুর রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক এয়ার চিফ মার্শাল (অব.) আবু এশরার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুখতার হোসেনসহ উভয় প্রতিষ্ঠানে উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পারভেজ তমাল বলেন, জনগণ ও বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকের প্রতি আস্থা রেখেছেন। আমরা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের সেই আস্থার প্রতিদান দেওয়া হবে।
উদ্বোধনের পর ডিএসই ও সিএসইতে ১৫ টাকা দরে লেনদেন শুরু হয়। দিনে সর্বনিন্ম দাম ছিল ১১ টাকা ৯০ পয়সা। দিনশেষে ব্যাংকটির শেয়ারমূল্য ছিল ১৩ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ দিন শেষে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য বেড়েছে ৩ টাকা ২০ পয়সা অথবা ৩২ শতাংশ। ডিএসইতে মোট ৩ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার৭০৫টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৮২ লাখ শেয়ার।
এদিকে ৩২ শতাংশ মূল্য বেড়ে প্রথম দিনেই এনআরবিসি ব্যাংক ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। ডিএসইতে গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রাইম ব্যাংকের ৯.৫২ শতাংশ, গোল্ডেন সনের ৯.০৯ শতাংশ, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিংয়ের ৮.৮০ শতাংশ, আমান কটনের ৮.১৩ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৮.১২ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্সের ৬.৫১ শতাংশ, বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকোর ৬.২৫ শতাংশ, সামিট এলায়েন্স পোর্টের ৬.১২ শতাংশ এবং আরামিটের শেয়ার দর ৬.০২ শতাংশ বেড়েছে।
এর আগে গত ১৬ মার্চ কোম্পানিটির আইপিও লটারিতে বিজয়ীদের বিও হিসাবে শেয়ার জমা দেওয়া হয়েছে। গত ৩ মার্চ আইপিওতে আবেদনকারীদের মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার জন্য লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। আর গত ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। এর আগে গত বছরের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৪৯তম সভায় ব্যাংকটির আইপিও অনুমোদন দেওয়া হয়।
এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক শেয়ারবাজার ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা জন্য ১২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি শেয়ারের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১০ টাকা।
কোম্পানিটির ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কনসুলেটেড আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৭৯ পয়সা। আর বছরের ৯ মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর,২০) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কনসুলেটেড আয় হয়েছে ২ টাকা ৪১ পয়সা। আইপিও পরবর্তী শেয়ার হিসাবে কোম্পানিটির ৯ মাসে কনসুলেটেড ইপিএস হয়েছে ২ টাকা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি কনসুলেটেড সম্পদ মূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকা ০১ পয়সা।