প্রতিটি নারীর স্বপ্ন গর্ভে সন্তান ধারণ করা, মা হওয়া। এ জন্য গর্ভকালীন সময়টা তাদের জন্য বেশ আনন্দের। আবার সে সময়টা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণও। তাই নিজের এবং অনাগত সন্তানের জন্য সাবধান থাকতে হবে যেন কোনও ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।
বিশেষ করে গর্ভপাতের মতো দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে বেশকিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। গর্ভবতী নারীর খাবারের ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়।
এই সময় একজন নারী নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। এক নতুন জীবন জন্ম দেওয়ার জন্যে নানা দায়িত্ব তার কাঁধে এসে পড়ে। যে আসছে তার ভালো থাকার জন্য নিজের ভালো থাকাটাও যে অনেক জরুরি। তাই গর্ভাবস্থায় নিজের ক্ষতি করে-এমন বেশ কিছু খাবার এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
এবার এসব খাবার সম্পর্কে একটু জেনে নেয়া যাক:
পেপে: কাঁচা পেঁপে গর্ভপাত ঘটাতে পারে। এতে ল্যাক্সাটিভ নামের একধরনের উপাদান থাকে যা আপনার মাতৃত্বের স্বাদ অকালেই নষ্ট করে দিতে পারে। এছাড়া পাকা পেপেতে থাকা বিচিও খুব বিপজ্জনক। তাই গর্ভকালীন সময়ে পেপে না খাওয়াই ভাল।
চিজ: চিজ অনেকেই খেতে ভালোবাসেন। কিন্তু আনপ্রসেসড চিজ খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। কারণ এতে লিস্টেরিয়া নামক ব্যাক্টেরিয়া থাকে। একইভাবে নরম চীজে পানি বেশি থাকে, আর এতে করে ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণ বেশি হয়।
আনারস: আনারসে ব্রোমেলেইন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে যা গর্ভবতী নারীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। এটা গর্ভপাত ঘটায়। বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস আনারস খাওয়া সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই প্রথম তিন মাস অবশ্যই আনারস এড়িয়ে চলুন এবং সম্ভব হলে গর্ভকালীন পুরো সময়টা আনারস না খাওয়াই ভালো।
কাঁচা ডিম: কাঁচা ডিম বা হাফ সিদ্ধ ডিম গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না। একইভাবে প্রসেসড মিট বা রোস্ট খাওয়াকেও না বলতে হবে। এ ক্ষেত্রে টকসোপ্লাজমা ব্যাক্টেরিয়া শরীরের মধ্যে গেলে শরীরের ক্ষতি করতে পারে। তবে সমুদ্রের মাছ খাওয়া ভালো, এতে ওমেগা -৩ থাকে। তবে সেই মাছও খেতে হবে পরিমিত।
বাসি সালাদ: সবুজ সালাদ স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। অবশ্যই সালাদ খান কিন্তু কখনোই অনেক আগের কেটে রাখা সালাদ খাওয়া যাবে না। তাই বাইরের কাটা সালাদকে এখন এড়িয়ে চলতে হবে। অনেক আগের কাটা সালাদে লিস্টেরিয়া প্যারাসাইট থাকে।
ধূমপান ও মদ্যপান: যেকোনো ধরনের নেশাকে না বলতে হবে। ধূমপান বা অ্যালকোহল কোনোটাই এই সময় নেওয়া উচিত না। অতিরিক্ত ডোপামিন হরমোন ক্ষরণ এই সময় বাচ্চার ক্ষতি করে।
চা-কফি: অনেকের মধ্যেই চা বা কফি খাওয়ার প্রবণতা আছে। স্ট্রেস কমাতে অনেকে এক কাপ চা বা কফি বেছে নেন। কিন্তু এই সময় চেষ্টা করতে হবে এই প্রবণতা কমানোর। অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে গেলে মিসক্যারেজের সম্ভাবনা বা কম ওজনের শিশু হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।
ঠাণ্ডা পানিও: অনেকেই আছেন যারা বাজারের বোতলজাত ঠাণ্ডা পানি পান করতে ভালোবাসেন। খাওয়ার পর কিংবা যেকোনো সময় একটু গলা ভিজিয়ে নিলে আরাম পাওয়া যায়। অনেকে কাজের চাপে পান করতে চান বিভিন্ন সফট ড্রিংক। কিন্তু এই সময় এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে। কারণ এতে প্রিজারভেটিভ থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকারক।
অ্যালার্জি হয় এমন খাবার না খাওয়া: বাইরে বা অন্য কোথাও গেলে খাবার খাওয়ার আগে জেনে নিতে হবে খাবারে এমন কিছু দেওয়া আছে কি না, যা থেকে আপনার অ্যালার্জি হয়।
গর্ভাবস্থার সময় যেকোনো নারীর জন্য খুব গুরুতপূর্ণ। তাই ভালো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজের ডায়েট বেছে নিতে হবে।