শুক্রবার, ২২শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

ঢাবি শিক্ষার্থীদের জন্য ‘প্রয়োজনে আমরা’ পৌঁছে দিচ্ছে জরুরি ঔষধ

প্রকাশঃ

ঢাবি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) হলগুলোর আশে পাশে নেই কোন ঔষধের দোকান। প্রায়ই শিক্ষার্থীদের তাঁদের প্রয়োজনীয় ঔষধ ক্রয়ে বেশ বেগ পেতে হয়। বেশিরভাগ সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ফার্মেসি থেকে ঔষধ ক্রয় করে থাকলেও, সেখানে প্রয়োজনীয় ঔষধ না মিললে ছুটতে হয় নীলক্ষেত কিংবা শাহবাগে। শিক্ষার্থীদের এমন কষ্ট লাঘবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ২৪/৭ জরুরি ঔষধ পৌঁছে দিচ্ছে ‘প্রয়োজনে আমরা’। এ মুহূর্তে জরুরি ঔষধের পাশাপাশি তাঁরা ফল-মূলও ডেলিভারি দিয়ে আসছেন। এখন পর্যন্ত ‘প্রয়োজনে আমরা’ থেকে সেবা নিয়েছে ১৫০- র অধিক মানুষ।

ফেসবুক ভিত্তিক এমন ডেলিভারি সেবার উদ্যোগ হাতে নিয়েছে বগুড়ার ছেলে মাহিনুর রহমান। পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে। একান্ত আলাপচারিতায় মাহিনুর বলেন, আশেপাশের ঔষধের সংকট কাটানোর জন্য আমাদের এ উদ্যোগ হাতে নেওয়া। কোন শিক্ষার্থী অসুস্থ থেকে ঔষধ সংকটে যেন না পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের আশেপাশের শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টা জরুরি ঔষধ ডেলিভারি সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। এছাড়াও সাম্প্রতিক যুক্ত হয়েছে ফল-মূল ডেলিভারি সেবা। ২০২০ সালে চালু হওয়া ফেসবুক ভিত্তিক ঔষধ ডেলিভারি সেবাতে, ১০ জন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত একটি টিম সক্রিয় আছে বলে জানান তিনি।

ঔষধ অর্ডার সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহিনুর বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা’ নামে আমাদের একটি ফেসবুক পেজ রয়েছে। গ্রাহক চাইলে আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ প্রেরণ কিংবা হটলাইনে নম্বরে ফোন দিতে পারেন। ঔষধের তালিকা কিংবা প্রেসক্রিপশন পাওয়া সাপেক্ষে দ্রুততার সহিত গ্রাহককে তাঁর ঠিকানা অনুযায়ী ঔষধ ডেলিভারি দেওয়া হয়ে থাকে। পুরো সেবাটিই ক্যাশ অন ডেলিভারিতে দেওয়া হয়।

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ সেবা দেওয়া হয় কিনা এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা ধরেই নিই একজন গ্রাহক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ঔষধগুলো কিনছেন। তবে কিছু ঔষধ আছে, যেগুলো চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া সরবরাহ করা হয় না।

মাহিনুর আরও বলেন, প্রথম ১ মাস ফ্রি ডেলিভারি সার্ভিস থাকলেও বর্তমানে ২০ টাকা ডেলিভারি চার্জে পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় সার্ভিস দিচ্ছেন তাঁরা। তবে এ ডেলিভারি চার্জ এখন পর্যন্ত একেবারে ফিক্সড না, সামনে হয়তো বাড়তে কিংবা কমতে পারে। সেক্ষেত্রে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে একটা ডেলিভারি চার্জ ফিক্সড করা হবে।

ঢাবি শিক্ষার্থী ছাড়া বাহিরের কেউ এ সেবা নিতে চাইলে পাবেন কি না, এ ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন- অবশ্যই পাবেন। কিছুদিন আগে শামসুন্নাহার হলের এক হাইজ টিউটর আমাদের এ সেবা নিয়েছেন।

ঔষধের পাশাপাশি যদি কোন গ্রাহকের কোন নিত্য-প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজন পড়ে, সেক্ষেত্রে যদি অনুরোধ রাখে আমাদের কাছে তা ডেলিভারি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়, বলে জানান মাহিনুর।

আরও পড়ুন : ঢাবি’র কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে একসঙ্গে পড়তে পারবেন তিন হাজার ১১০ জন শিক্ষার্থী

‘প্রয়োজনে আমরা’ এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে মাহিনুর রহমান টিম মেটদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বহুদূর যেতে চাই। ঢাবি ক্যাম্পাসের পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আমাদের কার্যক্রম চালু করার পরিকল্পনা আছে। আমরা শুধু ক্যাম্পাসের আশেপাশেই থাকতে চাই না, পুরো ঢাকাতে সকলের প্রয়োজনে পাশে থাকতে চাই; নতুন ভাবে, নতুন নতুন চাহিদাগুলো নিয়ে কাজ করে যেতে চাই।

মাহিনুরের উদ্যোগকে অনেক শিক্ষার্থী স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘প্রয়োজনে আমরা’ ক্যাম্পাসে যে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। বিশেষত হলে থাকা মেয়েদের জন্য বেশ সুবিধাজনক। অনেকে রাত হয়ে গেলে সেভাবে ফার্মেসি’তে যেতে পারে না তাঁরা। অথচ এখন হাতের নাগলেই মিলছে প্রয়োজনীয় ঔষধ।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ