মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

প্লেনের টিকিটের দাম ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে

প্রকাশঃ

প্লেনের টিকিটের দাম বাড়তে পারে ১০ শতাংশের বেশি জ্বালানি তেলের চড়া দামের কারণে। তবে এটি কোন পর্যায়ে পৌঁছাবে তা নির্ভর করছে মূলত তেলের দাম কোথায় স্থির হয় তার ওপর। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম আকাশ পরিবহন সংস্থা ডেল্টা এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী এড বাস্তিয়ান বলেছেন এসব কথা। খবর বিবিসির।

রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর সৃষ্ট অস্থিরতায় আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম সম্প্রতি ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে দেখা গেছে। মাঝে কিছুটা কমলেও গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) আবারও তা ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলারের ওপর উঠেছে। জেট ফুয়েলের বাড়তি দামের কারণে এরই মধ্যে টিকিটের ওপর সারচার্জ বসিয়েছে এমিরেটস, জাপান এয়ারলাইন, এয়ারএশিয়ার মতো বড় উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো।

করোনাভাইরাস মহামারির আগে ২০১৯ সালে ডেল্টা এয়ারলাইনে চড়েছিলেন প্রায় ২০ কোটি গ্রাহক। ওই বছর যাত্রী সংখ্যার দিক থেকে তারা ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আকাশ পরিবহন সংস্থা।

ডেল্টার প্রধান নির্বাহী বিবিসি’কে বলেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের একেকটি টিকিটে খরচ বেশি পড়বে সম্ভবত ২৫ ডলারের মতো, যা তেলের বাড়তি দামের ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে এর পরিমাণ আরও বেশি হবে।

জ্বালানি খরচ পোষাতে মার্কিন এই এয়ারলাইনটি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে টিকিটের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের টিকিটে সারচার্জ বসানোর পরিকল্পনা করছে।

ইউরোপের বৃহত্তম আকাশ পরিবহন সংস্থা রায়ানএয়ারের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ও’লেরিও মনে করছেন, তেলের দামে ঊর্ধ্বগতির কারণে এবারের গ্রীষ্মে প্লেন ভাড়াও বাড়তে পারে।

এয়ারলাইনগুলোর কাছে জ্বালানি হচ্ছে খরচের অন্যতম প্রধান কারণ। অনেক এয়ারলাইন মূল্যবৃদ্ধির এই সমস্যা থেকে বাঁচতে আগাম তেল কিনে রাখে। সম্প্রতি ইজিজেট এবং ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, তারা এ বছর তাদের জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই কিনে রেখেছে।

প্লেনের টিকিটের দাম বাড়ার মূল কারণ চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামে বড় উত্থান। জানুয়ারির শুরুতে অপরিশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ছিল ৮০ ডলারের নিচে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর দুই সপ্তাহের মাথায় মার্চ মাসে একপর্যায়ে এর দাম ওঠে ব্যারেলপ্রতি ১৩৯ ডলারে। এর পেছনে রুশ জ্বালানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে তা বলা বাহুল্য। অবশ্য যুদ্ধ সমাপ্তিতে রাশিয়া-ইউক্রেন আলোচনা শুরুর পর কিছুটা কমেছিল তেলের দাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম আবারও নয় শতাংশ বেড়ে ১০৬ দশমিক ৬৪ ডলারে পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাতিহ বিরলের মতে, অদূর ভবিষ্যতে তেলের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তার কথায়, আমার মনে হয়, আমরা আজকে যে ১০০ ডলারের তেল দেখছি, আগামী দিনগুলোর জন্য এটাই সর্বোচ্চ দাম নয়।

আইইএ’র এ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব সারা বিশ্বেই অনুভূত হবে। কারণ, এতে পরিবহনের পাশাপাশি বিদ্যুতের খরচ বেড়ে যাবে, যার ফলে অনেক দেশে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার সংকট আরও প্রকট হতে পারে।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ