বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দুটি ব্লকে কাজ করছে ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি। বাকি ২৪টি ব্লকের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা)। আর এ জন্য ৫৫টি আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে আহ্বান জানানো হয়েছে। আহ্বানে সাড়া দেওয়া কোম্পানিগুলো দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য ছয় মাস সময় পাবে। একই দিনেই দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়ে দরপত্রের বিষয়ে জানানোর কথা রয়েছে পেট্রোবাংলার।
রোববার (১০ মার্চ) দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এই দরপত্র আহ্বান করেছে রাষ্ট্রীয় কোম্পানিটি।
জানা গেছে, ২০১২ ও ২০১৪ সালে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয় বাংলাদেশের। সমুদ্রে মোট ২৬টি ব্লক আছে, যার মধ্যে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি। এসব ব্লকে ২০১০ সালে গভীর সাগরে ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ ব্লকে কাজের আগ্রহ দেখায় কনোকো ফিলিপস। কোম্পানিটি ২ডি জরিপ শেষে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি করে, সেই দাবি না মানায় কাজ ছেড়ে চলে যায় কোম্পানিটি। অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ুও চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায়। বর্তমানে সমুদ্রের ২টি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি। তাই এ দুটি বাদ দিয়ে ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সন মবিল ও শেভরনও এই বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে।
সর্বশেষ ২০১৬ সালে সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহ্বান করেছিল পেট্রোবাংলা। এরপর ২০১৯ সালে নতুন উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) করা হলেও দরপত্র ডাকা হয়নি। গত বছরের জুলাইয়ে নতুন পিএসসি চূড়ান্ত অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। যেখানে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আকর্ষণে আগের চেয়ে সুবিধা বাড়ানো হয়। অবশেষে সেই দরপত্র আহ্বান করলো পেট্রোবাংলা।
এবারের অংশীদারি চুক্তিতে (পিএসসি) বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করতে নীতিমালায় বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে দাম ঠিক করা হবে। গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের শেয়ারের অনুপাত বাড়তে থাকবে। গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের শেয়ার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করবে। কোম্পানি যদি গ্যাস বিক্রি করতে চায়, তাহলে প্রথমে পেট্রোবাংলাকে প্রস্তাব দিতে হবে, পেট্রোবাংলা নিতে না চাইলে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রির সুযোগ পাবে বিদেশি কোম্পানি।
এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, ডাটার জন্য আলাদা ৮টি প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। যেগুলো কিনে আমাদের ব্লকগুলো সম্পর্কে তথ্য পাবে আগ্রহী কোম্পানিগুলো।