রবিবার, ২৪শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

বিশ্বে মৃত্যু ২ লাখ ৫৫ হাজার, আক্রান্ত ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার

প্রকাশঃ

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকায় কমতে শুরু করেছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। করোনাভাইরাস সংক্রামনে সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬৯ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬১ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১২ লাখ ২৪ হাজার ৯৫ জন। ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী এসব জানাগেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা আবার দেশটিতে এক মাসের মধ্যে দৈনিক হিসেবে সর্বনিম্ন সংখ্যক। দেশটিতে এ পর্যন্ত ১ দশমিক ১৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৮ হাজার ৬৮৯ জনের। এদিকে হোয়াইট হাউস আশঙ্কা প্রকাশ করছে, দেশে এক লাখ থেকে আড়াই লাখের মতো মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্যের কয়েক দেশে লকডাউল শিথিল : করোনাভাইরাসের প্রভাব কমে আসায় মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। অনেক দেশেই খুলে দেয়া হয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যানবাহন, কল-কারখানা। সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে ইরানে। দেশটির অনেক শহরেই লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। রাজধানী তেহরানে খুলে দেয়া হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শপিংমল। করোনায় ইতোমধ্যেই ইরানে ছয় হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। জর্দানেও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে। দেশটির শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে সব শিল্প কারখানা পুরোদমে উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারবে। এদিকে বাহরাইন পবিত্র মাস রমজান শুরু হতেই কিছু নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। তবে বাইরে গেলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। আমিরাতেও সীমিত সংখ্যক ক্রেতা রাখার শর্তে কিছু শপিংমল খুলে দেয়া হচ্ছে।

ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু যুক্তরাজ্যে : ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি মৃতের সংখ্যা এখন যুক্তরাজ্যে। দেশটিতে ভাইরাসে সংক্রমিত ৩২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে এক পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে। করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের শিকার ছিল ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার ৭৩ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য মৃতের সংখ্যার দিকে থেকে ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে এরপরের অবস্থানে রয়েছে স্পেন। স্পেনে সম্প্রতি করোনায় মৃতের সংখ্যা কমে এসেছে। দেশটিতে এখন করোনায় মৃতের মোট সংখ্যা ২৫ হাজার ৪২৮। আর ফ্রান্সে মারা গেছে ২৫ হাজার ২০১ জন করোনা আক্রান্ত।

রাশিয়ায় আক্রান্ত দেড় লাখ ছাড়াল : রাশিয়ায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার নতুন করে ১০ হাজার ১০২ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে। এতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়েছে। দেশের করোনাভাইরাস রেসপন্স হেডকোয়ার্টারের তথ্য মতে, মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৭০ জনের শরীরে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ রোগে মোট ১ হাজার ৪৫১ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

ভারত-পাকিস্তানে আক্রান্তের রেকর্ড : ভারতে একদিনে আক্রান্তের নতুন রেকর্ড হয়েছে। ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩ হাজার ৯০০ জনের দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৪৩৩ জন। ১ হাজার ৫৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে রবিবার ভারতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২ হাজার ৬৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছিল। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছে, এক কোটি এক লাখ ৯০ হাজার জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এদিকে পাকিস্তানে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে রেকর্ড ১ হাজার ৩১৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, এটাই দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ। দেশটিতে মোট ২১ হাজার ৫০১ জন আক্রান্ত, আর মৃত্যু হয়েছে ৪৮৬ জনের।

৮ বিলিয়ন ডলারের তহবিল : ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে ৮ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করতে রাজি হয়েছেন বিশ্ব নেতারা। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) আয়োজিত ভার্চুয়াল সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা করোনার টিকা ও চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ৮ বিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ইইউ আয়োজিত এই ভার্চুয়াল সভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ব্যতীত অন্যান্য ৪০টি দেশের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা, বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং করোনার বিরুদ্ধে লড়তে বিভিন্ন অঙ্কের অনুদান দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ইইউ জানিয়েছে, এই ৮ বিলিয়ন ডলারের মধ্য থেকে ৪.৪ বিলিয়ন খরচ হবে করোনার টিকা আবিষ্কারের লক্ষ্যে। অর্থাৎ টিকা আবিষ্কার, উন্নয়ন ও গবষণায়। ২ বিলিয়ন খরচ হবে টিকার বাইরে আর কোন কোন উপায়ে করোনাভাইরাসের চিকিৎসা করা যায় সে লক্ষ্যে। বাকি ১.৬ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পেছনে।

ফিলিস্তিনে ৫ জুন পর্যন্ত জরুরী অবস্থা জারি : করোনাভাইরাস সঙ্কট মোকাবেলায় ফিলিস্তিনে ৫ জুন পর্যন্ত জরুরী অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। ভাইরাস প্রতিরোধে দুমাস আগে প্রথম জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়।এবার আব্বাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে জরুরী অবস্থার সময়সীমা ৫ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলো। তবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি রক্ষায় গত মাসে ফিলিস্তিনে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করে কিছু ব্যবসা চালু করার সুযোগ দেয়া হয়। এ পর্যন্ত ৩৪৫ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং পশ্চিম তীর অঞ্চলে মারা গেছেন দুজন।

প্রসঙ্গত গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে আক্রান্ত বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেটি প্রতিরোধে গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ছুটি বাড়িয়ে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ