শিল্প খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ বিতরণ ও আদায় দুই বাড়ছে। বিশেষ করে শিল্প স্থাপনের মেয়াদী ঋণ বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খেলাপী ঋণের পরিমাণও। দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া থেকে যাচ্ছে এ অর্থ। ফলে এ খাতে বকেয়ার পরিমাণ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত নয় মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে সাড়ে ৩৬ শতাংশের বেশি।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে (জুলাই-মার্চ) এ খাতে ঋণ বিতরণ ও আদায় বেড়েছে যথাক্রমে ১৩.৭২ শতাংশ ও ১৩.৯৮ শতাংশ। একই সময়ে খেলাপী ঋণ বেড়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি বা ৩৬.৫২ শতাংশ। তবে গত তিন মাসে এ খাতে ঋণ বিতরণের পরিমাণ কমেছে ১০ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা বা ১০.৮১ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
ব্যাংকাররা জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঋণ নিয়ে ফেরত না দেয়ার সংস্কৃতি বেড়েই চলেছে। এখন সব খাতের ঋণেই খেলাপীর পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। ফলে অন্য খাতের তুলনায় শিল্পের ঋণখেলাপী কম হয়। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষ কয়েক গ্রাহকের কাছে শিল্প ঋণের টাকার বড় অংশ খেলাপী হওয়ায় এবার শিল্প ঋণের খেলাপী বেড়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের দাবি, বৃহৎ শিল্প ঋণে সুদ হার বেশি নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। যদিও সম্প্রতি ঋণ খেলাপীদের নানা সুবিধা দিয়েছে সরকার।
জানা গেছে, গত মার্চ শেষে দেশের শিল্প খাতে বকেয়া ব্যাংক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার ৪৮৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। গত বছরের এই সময়ে যা ছিল ৩৬ হাজার ৯৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। নয় মাসের ব্যবধানে বকেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ৮৯৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা বা ৩৬.৫২ শতাংশ। অথচ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এই সময়ে এ খাতে মোট ঋণ বিতরণ হয়েছে ২ লাখ ৮৫ হাজার ১৭৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
গত অর্থবছরে একই সময়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা। ফলে এ সময়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৩.৭২ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের (জুলাই-মার্চ) পর্যন্ত সর্বোচ্চ শিল্প ঋণের যোগান দিয়েছে বেসরকারী ব্যাংকগুলো, এই হার ৭৬.৩৩ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো ২.৯১ শতাংশ, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১.১৮ শতাংশ, বিদেশী ব্যাংকগুলো ১৪.৩৮ শতাংশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫.৭৫ শতাংশ যোগান দিয়েছে।