বর্তমানে ‘শিশুর স্থূলতা’ একটি আলোচিত বিষয়। আর এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং শিশু পছন্দ করে এমন খাবার ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী। সেই সঙ্গে ঠিক সময় না খাওয়া, কম ঘুম, হতাশা ইত্যাদি দেখা যায় শিশুর জীবনে। যার ফলে বয়সের তুলনায় শিশুর ওজন বাড়ছে অধিক হারে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোটবেলা থেকেই শিশুকে নির্দিষ্ট নিয়মে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে। মা-বাবাকেও মানতে হবে কিছু নিয়ম। রান্না করতে ইচ্ছে করছে না বলে শিশুকে দোকানের খাবার, যখন তখন বায়না করলেই চকোলেট দেয়া, ঘুম থেকে তুলে পড়তে বসানো এসব অভ্যাস বদলাতেই হবে।
সন্তানের ওজন ঠিক রাখতে যেসব নিয়ম মেনে চলা উচিত:
পর্যাপ্ত ঘুম: শিশু বয়সেই বুদ্ধি ও দেহের বিকাশ ঘটে। এই বয়সে শরীর গঠনে বড় ভূমিকা রাখে ঘুম। তাই কমপক্ষে সাত-আট ঘণ্টা ঘুমের সময় রাখতে হবে শিশুদের।
পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া: পুষ্টিবিদের কাছে যান শিশুকে নিয়ে। ওর নির্দিষ্ট বয়সে খাদ্যের তালিকা ঠিক কেমন হবে তা মেনে চলুন। এই তালিকায় শিশুদের পছন্দের খাবারও থাকে। কেবল দরকার কতটা খাবে আর কখন খাবে তা নিয়ে পরিমিতিবোধ।
মানসিক চাপ: সন্তানের মানসিক চাপ বাড়তে পারে এমন কোন পদক্ষেপ নিবেন না। বরং ওর আগ্রহের ব্যাপারে জোর দিন। ওকে ওর মতো বড় হতে দিন। একটা বয়সে সবই ঠিকই হয়ে যাবে। অকারণে ভীতি বা চাপের মধ্যে ফেলবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
ফাস্ট ফুড: যখন তখন বাড়িতেই নুডলস বা ফ্রোজেন ফুড এনে বানিয়ে দেওয়া অথবা অতিরিক্ত স্নেহের কারণে শিশু ফাস্টফুড খাচ্ছে, এতে শিশু স্থূল হচ্ছে। অভ্যাস পরিহার করুন। দোকানের সুপ ও ঠান্ডা পানীয়ও এড়িয়ে চলুন। এসবে থাকা অতিরিক্ত চিনি ও প্রিজারভেটিভসে থাকা সোডিয়াম ফ্যাট বাড়ায় দ্রুত। বরং বাড়িতে বানানো খাবারে সন্তানকে অভ্যস্ত করুন। নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে মিষ্টি জাতীয় খাবার।
চকোলেট: শিশুদের প্রিয় খাবার চকোলেট। এই চকোলেট দাঁতের ক্ষতির সঙ্গে ওজনও বাড়ায় হু হু করে। তাই কথায় কথায় চকোলেট না দিয়ে মাঝে মধ্যে দিবেন। তা যদি ডার্ক চকোলেট হয়, তাহলে খুবই ভাল।
ফ্রিজের ঠান্ডা পানি: গরমে ঠাণ্ডা পানি শিশুরা পছন্দ করে। ঠান্ডা পানি ওজন বাড়ার জন্য দায়ী। এই অভ্যাসকে একেবারেই প্রশ্রয় দিবেন না। এর জন্য পরিবারের অন্য সদস্যরাও ঠাণ্ডা পানি পরিহার করুন ।
ভাত কম দিন: যে শিশুর ওজন বাড়তির দিকে তাকে ছোট থেকেই ভাত কম দিন। ভাতের জায়গায় দু’-একটি রুটিও দিতে পারেন। কম ভাতের সঙ্গে সবজি, মাংস, মাছ, দুধ, টক দই এসব বেশি বেশি দিতে পারেন।
শরীরচর্চা বা খেলাধুলা: খেলাধুলা শরীর ও মন দুটোই ভাল রাখে। সাঁতারেও ভর্তি করে দিতে পারেন। বাসায় ছুটাছুটি করতে দিন। বড়রা শরীর ঠিক রাখার জন্য বাসায় যেভাবে হালকা ব্যায়াম করেন তখন আপনার সন্তানকেও নিতে পারেন সঙ্গে।