বুধবার, ২৭শে নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

৫০ শতাংশের বেশি মানুষ জানেন না তাদের উচ্চ রক্তচাপ

প্রকাশঃ

উচ্চ রক্তচাপ থাকা ৫০ শতাংশেরও বেশি মানুষ জানেন না তাদের সমস্যার কথা। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। বর্তমানে দেশে উচ্চরক্ত চাপ থাকা ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬৭ শতাংশ পুরুষ ও ৫১ শতাংশ নারীই জানেন না তাদের উচ্চরক্তচাপ রয়েছে। উচ্চ রক্তচাপ একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা। নীরব ঘাতক।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- উচ্চরক্তচাপের কারণে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়া এবং মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। শুধু উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ৮০ শতাংশ স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটার্ক প্রতিরোধ সম্ভব। ১৮ বছরের পর থেকেই প্রতিবছর ব্লাড পেশার মেপে দেখা যেতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সকালের দিকে মাথাব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, হৃৎপি-ের অনিয়মিত ছন্দ, দৃষ্টিতে পরিবর্তন এবং কানে গুঞ্জন অনুভূতি প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। অত্যধিক উচ্চ রক্তচাপ ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, বমি, বিভ্রান্তি, উদ্বেগ, বুকে ব্যথা এবং পেশী কম্পনের কারণ হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত করার একমাত্র উপায় হলো চিকিৎসক বা পেশাদার স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা রক্তচাপ পরিমাপ করা।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. শামীম জোয়াদ্দার বলেন, ১৮ বছর বয়সে ব্লাড পেশার মাপবেন। যদি দেখেন নরমাল। ছয়মাস এক বছরের মধ্যে মাপতে হবে না। এক বছর পরে আবার মাপবেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউটের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, অতিরিক্ত লবণ বন্ধ করতে পারলে ৫০ শতাংশের উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যেতো। একজন মানুষের প্রতিদিন ৫ গ্রাম লবণ প্রয়োজন অর্থাৎ এক চামচ।

ঘরে লবণ খাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবারের সদস্য হিসেবে তরকারিতে ঠিক ক’চামচ লবণ দেয়া দরকার, তার বেশি নয়। ২০২০ সালে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৩ কোটি, যা ২০৩০ সাল নাগাদ গিয়ে দাঁড়াবে ৩ কোটি ৮০ লাখ। তাই বিশেষজ্ঞরা স্কিনিংয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন।

গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, প্রথমে স্কিনিং করতে হবে। স্কিনিংয়ে আসার পর যাদের আছে। তাদের সেই হিসেবে ট্রিটমেন্ট দেয়া। আর যাদের নেই তাদের যাতে না হয় সে হিসেবে কি কি লাইফস্টাইল চেঞ্জ করতে হবে সে বিষয়ে আমরা বলবো। প্রথম কাজ হচ্ছে সবাইকে স্কিনিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা।

‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০১৮’ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে মাত্র ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রতি ৭ জনে একজনেরও কম। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীই অর্থাৎ ৬৪ শতাংশ কোনো ওষুধ সেবন করে না।

গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিস স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের একটি উচ্চ রক্তচাপ। বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগজনিত অসুস্থতায় মারা যায়, যার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ।

ডব্লিউএইচওর তথ্যমতে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫ লক্ষাধিক মানুষ অসংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণ করেন, যার প্রায় অর্ধেক হৃদরোগজনিত।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ