সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান পদে ড. জায়েদ বখ্ত এর পুনঃনিয়োগ

প্রকাশঃ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পত্র নং ৫৩.০০.০০০০.৩১১.১১.০০৪.১৭-৫৩৮ তারিখ ০৭-১২-২০২০ ইং এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড এর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখ্ত কে পুনরায় ৩ বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যা ০৯-১২-২০২০ ইং তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি পত্রের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়।

ড. জায়েদ বখ্ত ১৯৭১ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এ স্টাফ ইকোনোমিস্ট হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৭৮ সালে একই প্রতিষ্ঠানের রিসার্চ ফেলো হিসেবে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন এবং ১৯৮৪ সালে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৯৮ সালে গবেষনা পরিচালক নিযুক্ত হন। ড. জায়েদ বখ্ত গবেষনা পরিচালক হিসেবে দীর্ঘ কর্মজীবনে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিস্তর বিষয়ে নানামুখী গবেষনায় নিজের অসামান্য অবদান রেখেছেন।

কর্মদক্ষতার বিচার করে সরকার ২০১২ সালের ১৯ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন এবং সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করায় ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর বিধান অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৮ নভেম্বর তিন বছরের জন্য অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। অগ্রণী ব্যাংকে যোগদানের পর থেকে তার যুগোপযোগী দিক নির্দেশনা ও কর্মদক্ষতায় অগ্রণী ব্যাংক অভাবনীয় সাফল্য পাওয়ায় ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় মেয়াদে ও তিন বছরের জন্য তাঁকে নিয়োগ দেয় সরকার। অগ্রণী ব্যাংকের এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চলতি বছরের ৭ ডিসেম্বর পুনরায় ৩য় মেয়াদে আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয় সরকার। টানা তিন মেয়াদে এক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থেকে রেকর্ড গড়লেন এই বরেণ্য অর্থনীতিবিদ, যা দেশের ব্যাংকিং জগতে একটি বিরল ঘটনা।

ড. জায়েদ বখ্ত এর আগে একাধারে শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার জন্য ইকোনোমিস্ট প্যানেল এর সদস্য, সরকারি ব্যয় পর্যালোচনা কমিশনের সদস্য, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় আয় হিসাব পর্যালোচনা কমিটির সদস্য, সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং শিল্পনীতি গঠন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সদস্য থেকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের উন্নয়ন নীতিমালায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

তিনি বিআইডিএস ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত ‘Post-Gradutate Diploma in Macroeconomic Analysis এর কো-অর্ডিনেটর, নর্থ সাউথ বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ এবং এমবিএ প্রোগ্রামের Visiting Professor, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির Adjunct Professor, আর্মড ফোর্সেস স্টাফ কলেজ, পিএটিসি, নায়েম, এবং প্ল্যানিং একাডেমির গেস্ট স্পিকার ছিলেন।

শুরুটা ছিলো অনেক চ্যালেঞ্জের। যখন তিনি অগ্রণী ব্যাংকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন তখনই আমানত এবং বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের প্রতিকূলতা কাটিয়ে অগ্রণী ব্যাংককে এক অনন্য উ”্চতায় নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন। তার যোগ্য সু-নেতৃত্ব এবং একের পর এক দূরদর্শী পদক্ষেপই কার্যত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে গেছে। তার এই কর্মদৃষ্টান্ত দেশের অন্য সব ব্যাংকগুলোর মধ্যে এখন উদাহরণ। তার সময় উপযোগী দিক নির্দেশনায় রেমিট্যান্স আহরণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংগুলোর মধ্যে অগ্রণী ব্যাংক শীর্ষ স্থান দখল করে নিয়েছে। তাঁর মানবিক নেতৃত্বে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনা দুর্যোগের মধ্যেও পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক গতিতে ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক। করোনাকালীন সংকটের মধ্যেও ব্যাংকটির প্রথম ছয় মাস পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৫৩১ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, রেমিট্যান্স আহরণের ভিত অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় অনেকটাই মজবুত। ড. জায়েদ বখত এর নির্দেশনায় উদ্ভাবনী ব্যাংকিং জগতের প্রতীক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও মোহম্মদ শামস্-উল ইসলামের দক্ষ নেতৃত্ব এবং অগ্রণীয়ানের আন্তরিক শ্রমে ক্রমেই উন্নতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে অগ্রণী ব্যাংক। তিনি যোগদানের পর থেকে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা, আমানত, ঋণ, অগ্রীম, আমদানী-রপ্তানী, শ্রেণী বিন্যাসিত ঋণের হার ২৯ থেকে ১৩% এ নামিয়ে আনা প্রভৃতি ব্যবসায়িক সূচকগুলো ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবেই অগ্রণী ব্যাংক আজ দেশের সেরা ব্যাংকে পরিনত হয়েছে।

তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি অনার্স এবং ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের ইসলামাবাদ বিশ^বিদ্যালয় (বর্তমানে কায়েদ এ আযম বিশ্ববিদ্যালয়) হতে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি থেকে দ্বিতীয়বার অর্থনীতিতে এমএসসি এবং একই ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৭৮ সালে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

এ পর্যন্ত ড. জায়েদ বখ্ত -এর ১৩টি গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়। তিনি বাংলাদেশ সরকারের ৫টি, বিশ্বব্যাংকের ৬টি, ILO এর ২টি, ADB এর ৩টি, ESCAP এর ৩টি, EU এর ২টি, FAO এর ১টি, UNCTAD এর ২টি, Japan Bank for International Co-Operation (JBIC) এর ১টি গবেষণা প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে ৫টি যৌথ গবেষণাকর্ম রয়েছে তার। তিনি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) থেকে প্রকাশিত ২ টি জার্নালেরও সম্পাদনা করেছেন।

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ