সোমবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৮ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

UCB Bank

আজ পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস

প্রকাশঃ

আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস । বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হতে যাচ্ছে ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ বা ভালোবাসা দিবস। দুই উৎসবকে ঘিরে জোড়া উৎসবের আমেজ।

এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত, ফাগুনের হাওয়া বইছে ফুলে ফুলে ভ্রমর করছে খেলা। আর গাছে গাছে পলাশ শিমুলের মেলা। ঋতুরাজকে বরণে প্রকৃতিতে সাজ সাজ রব। নতুন প্রত্যয়ে, সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেয় বসন্ত। দেয় ঝলমলে দিনের আশ্বাস। প্রকৃতির সেই রঙে তাই মনকে রাঙাত চায় মানুষও।

উদাসী শীতের পাতা ঝড়ার দিন শেষ। বিবর্ণ প্রকৃতিতে সতেজতার ছোঁয়া। নতুন কুঁড়ির আগমনী বার্তা, মনে করিয়ে দেয়, ভাঙনের পর সবকিছু নতুন করে গড়ার।

পশ্চিমের ভ্যালেনটাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবসের ধারণা এসে মিলেছে আমাদের বসন্তে। বাংলা একাডেমি পঞ্জিকা সংশোধনের পর এখন পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে উদযাপিত হয়।

ভালোবাসার মানুষকে আরো কাছে পাওয়ার সময় এ বসন্ত। বসন্ত আসে তরুণের পোশাকে, মননে, সংগীতে। বাঁধনহারা মন এ সময় গেয়ে ওঠে, ‘মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে। ‘

তবে বসন্ত কেবল প্রেমের ঋতু নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির দ্রোহের ইতিহাসও। এমনই এক বসন্তে বাঙালি ভাষার জন্য আন্দোলন করেছিল। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি ছিল ৮ ফাল্গুন। সেদিন মাতৃভাষার মর্যাদা রাখতে জীবন দিয়েছিলেন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর। ঋতুরাজ বসন্ত তাই প্রেম, আনন্দ, ভালবাসা, প্রতিবাদ আর তারুণ্যের প্রতীক।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে বাঙালি করেছে বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের অসহযোগ আন্দোলন আর ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ। সেদিক থেকে দেখতে গেলে বসন্তে রোপিত হয়েছিল বাংলাদেশের জন্মের বীজ।

তেমনি আশির দশকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এক চূড়ান্ত রূপ নিয়েছিল এমনই এক বসন্তে। ১৯৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রাণ দিয়েছিলেন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ুব, কাঞ্চন, দিপালীরা। সেই আন্দোলনের পথ বেয়ে নব্বইয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল গণতন্ত্রের স্বাদ।

দ্রোহ হোক বা প্রেম, বসন্ত আমাদের জীবনে বয়ে নিয়ে আসে নতুন আশা। রুক্ষ শীত শেষে বসন্তের আগমনে প্রকৃতিতে জাগে নতুন আনন্দ। অথচ সময়টা মলিন। করোনা মহামারির একের পর এক ঢেউ আমাদের শঙ্কিত মনকে বিবর্ণ করে তুলেছে। বসন্তকে তাই আরো বেশি প্রয়োজন এখন।

এবারের বসন্ত নতুন জীবনীশক্তিতে প্রকৃতি ও প্রাণকে ভরিয়ে তুলুক। বসন্তের দোলা লাগুক বনে, মনে। উল্লসিত মন গেয়ে উঠুক, ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে। ‘

শেয়ার করুনঃ

উপরের পোস্টটি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

আপনার মন্তব্য লিখুন!
এখানে আপনার নাম লিখুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এই মাত্র প্রকাশিত

এই বিভাগের আরও সংবাদ