আড়াই কোটিরও বেশি মানুষ এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেনি । সংক্রমণ করোনা প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রমে জোর দিয়েছে সরকার। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের পাশাপাশি এখন বুস্টার ডোজ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এরই মধ্যে দেশে প্রায় ছয় লাখ মানুষকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নানা কারণে টিকা নিতে মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। আবার প্রথম ডোজ নিলেও দীর্ঘদিন দ্বিতীয় ডোজের এসএমএস পাচ্ছেন না অনেকেই। যেসব কারণে বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী এখনও টিকার আওতার বাইরে রয়েছে। আর এই আগ্রহ ঘাটতির পেছনে সরকারের প্রচারহীনতাকে দায়ী করছেন তারা।
তবে বরাবরের মতো এবারও দায় নিতে নারাজ স্বাস্থ্য অধিদফতর। তাদের দাবি, প্রতিটি এলাকায় পর্যাপ্ত প্রচারণা চালানো হয়েছে। টিকাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, দেশে এখনও টিকার ২য় ডোজ নেয়নি এমন আড়াই কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিশিল্ড টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৮৩ লাখ ৮১ হাজার ৩৫ জন। এছাড়াও ফাইজারের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৬৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৪ জন, মডার্নার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৬৯ হাজার ৮৬০ জন, সিনোফার্মের টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ৭৯ লাখ ২৮ হাজার ৩০৫ জন, সিনোভ্যাক টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ২২ লাখ ১৪ হাজার ৫৮০ জন। সবমিলে দেশে প্রথম ডোজের টিকা নিয়ে এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেয়নি ২ কোটি ৫১ লাখ ৫৭ হাজার ১৯৪ জন।
দেশে গত বছরের (২০২১ সাল) ২৭ জানুয়ারি করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনেকার টিকার মাধ্যমে দেশে টিকাদান শুরু হলেও বর্তমানে ফাইজার, সিনোফার্ম এবং মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে।
এত দিন মাস্ক না পরলে সরকারি কোনো সংস্থায় সেবা মিলত না। তবে এখন সেবা নিতে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণও বাধ্যতামূলক হচ্ছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তবে, মাঠ পর্যায়ে ঘুরে দেখা গেছে, নো ভ্যাকসিন, নো সার্ভিস এখনও কঠোরভাবে কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তবে সেবাগ্রহীতাদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক রয়েছে। মাস্ক না পরলে কেউ সরকারি সেবা প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে পারে না। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের সরকারি অফিসে মাস্ক পরিধানের বিষয়টি কঠোরভাবে পালন করা হচ্ছে।