ঋণ মওকুফের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে শিথিলতার সুযোগকে অনেকেই অপব্যবহার করেন। এ অপব্যবহার বন্ধে ঋণ মওকুফের ক্ষেত্রে নতুন শর্ত আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো ঋণগ্রহীতার ধারাবাহিক তিন বছরের আর্থিক বিবরণীতে নিট মুনাফা ইতিবাচক হলে তার নেওয়া ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রবিধি ও নীতি বিভাগ-বিআরপিডি থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
দেশের সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক ঋণের আসল বা মূলধন মওকুফ করা যাবে না। কোনো জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না। এছাড়া ব্যাংকের আয় খাতে ক্ষতি করেও সুদ মওকুফ করা যাবে না। একই সঙ্গে কোনো ঋণের সুদ মওকুফ করতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন লাগবে। আবার পর্ষদও ১০ লাখ টাকার অধিক ঋণের সুদ মওকুফ করতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, সুদ মওকুফের ক্ষেত্রে ব্যাংকের তহবিল ব্যয়ের অর্থ আদায় নিশ্চিত করতে হবে। তিন বছর ধরে বন্ধ প্রকল্প, ঋণের জামানত ও প্রকল্পের সম্পত্তি বা প্রকল্প উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিক্রয়ের পরেও তহবিল ব্যয় মেটানো সম্ভব না হলে কিংবা পাওনা আদায়ের লক্ষ্যে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের পরও পাওনা আদায় করা সম্ভব না হলে তহবিল ব্যয় আদায়ে শর্ত শিথিল করা যেতে পারে। তবে ঋণগ্রহীতার মৃত্যু, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, মড়ক, নদী ভাঙন বা দুর্দশাজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতা যৌক্তিক কারণে ঋণ পরিশোধে অপারগ হলে সেই নির্দিষ্ট বছরের ৩১ ডিসেম্বর ভিত্তিক তহবিল ব্যয় আদায়যোগ্য হবে না।
এক্ষেত্রে তহবিল ব্যয় আদায়ের শর্ত শিথিল করার যৌক্তিকতা প্রমাণে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগের মতামত নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া নতুন নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিটি ব্যাংককে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের আগে সুদ মওকুফ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।