এইচএসসির সব পরীক্ষা চলতি বছর নেওয়া সম্ভব হয়নি। কিছু পরীক্ষা হয়েছে। সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন চলছে। যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা হয়নি, সেগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল তৈরি করা হবে।
সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষার ফল তৈরির জন্য পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজপত্র চেয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট, এইচএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব পরীক্ষা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষদের বোর্ডে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ১৯৯৬ সালের আগে এসএসসি পাস করা প্রাইভেট পরীক্ষার্থীদের এসএসসি পাসের নম্বরপত্রের ফটোকপি (সংশ্লিষ্ট বোর্ড যাচাইকৃত) এবং এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪-এর প্রবেশপত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষ কর্তৃক সত্যায়ন করে ঢাকা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষার্থীদের তালিকা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।
এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪ এর সমতুল্য সনদধারী পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও সমমান (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা নম্বরপত্র (নম্বর বা গ্রেড পদ্ধতির প্রমাণক কাগজপত্রসহ) ঢাকা বোর্ডের সমতুল্য সনদ এবং এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪-এর প্রবেশপত্রের ফটোকপি অধ্যক্ষের কাছ থেকে সত্যায়ন করে বোর্ডের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, যেসব পরীক্ষার্থী কারিগরি বোর্ড, মাদরাসা বোর্ড এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের জেএসসি ও সমমান এবং এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট এবং এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৪-এর প্রবেশপত্রের ফটোকপি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অধ্যক্ষের কাছ থেকে সত্যায়ন করে বোর্ডের পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
সব পরীক্ষার্থীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি, বিষয় কোড-২৭৫) বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর (শ্রেণি কার্যক্রম চলাকালে প্রাপ্ত) অনলাইনে পাঠিয়ে, এর প্রিন্ট কপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করতে হবে। মূলকপি বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে। কোনো অবস্থাতেই ব্যবহারিক পরীক্ষার অজুহাতে পরীক্ষার্থীদের কলেজে ডাকা যাবে না।
এছাড়া অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক অনুপস্থিত ও বহিষ্কৃত পরীক্ষার্থীদের তালিকা ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় হাতে হাতে জমা দিতে হবে।
অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক স্বাক্ষরলিপি এক কপি কেন্দ্রে সংরক্ষণ করে মূলকপি ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শাখায় একইভাবে জমা দিতে হবে।
গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম দফায় প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।
সূচি অনুযায়ী- ১৩ দিনে মোট ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ বাকি ছিল। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় এতগুলো পরীক্ষা স্থগিত এবং পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তা বাতিল করা হয়।
যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩টি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে আবশ্যক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) ও আইসিটি। বাকি ৮টি বিষয় ঐচ্ছিক (বিভাগভিত্তিক)।
সিলেট বোর্ড ছাড়া বাকি বোর্ডগুলোর আবশ্যক ছয়টি এবং কেউ কেউ বিভাগভিত্তিক একটি পরীক্ষাসহ ৭টি পরীক্ষা দিয়েছেন। ফলে কারও ছয়টি, কারও সাতটি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, যেগুলো সবই বিভাগভিত্তিক।