এনআইডি ও জন্মসনদের তথ্যে পাওয়া যাবে পাসপোর্ট। পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজনীয়তা শিথিল করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীরের এ তথ্য জানান।
নির্দেশনায় বলা হয়, নতুন পাসপোর্টের আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীকে পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য পাসপোর্ট নতুন আবেদনের ক্ষেত্রে অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মনিবন্ধন সনদের তথ্যের ভিত্তিতে আবেদনকারীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া পাসপোর্ট প্রদান করতে হবে।
পাসপোর্ট আবেদনের তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেজ বা জন্মনিবন্ধন ডাটাবেজের সঙ্গে যাচাই করা হলে তা বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ, ১৯৭৩এর৫(২) ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য করা হবে বলে নির্দেশনা জানানো হয়।
সারসংক্ষেপে বলা হয়, পাসপোর্ট ইস্যু বাংলাদেশের একটি অন্যতম নাগরিক সেবা। বাংলাদেশের এক কোটিরও বেশি নাগরিক বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতিমাসে গড়ে ৩০ হাজার মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে বিদেশে যান। এছাড়া উচ্চশিক্ষা, স্থায়ীভাবে বসবাস ইত্যাদি নানা উদ্দেশ্যে বাংলাদেশি নাগরিকরা বিদেশে যান। বিদেশে ভ্রমণের নাগরিকদের জন্য পাসপোর্ট একটি আবশ্যক ডকুমেন্ট বর্তমানে দেশে ও বিদেশের পাসপোর্ট অফিস সময়ে প্রতিদিন গড়ে ২৮ থেকে ৩০ হাজার আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় এবং ২৫ থেকে ২৮ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট করা হয়।
বিদ্যমান ই-পাসপোর্ট সিস্টেমে পাসপোর্টের জন্য ঘরে বসে আবেদন দাখিল অনলাইনে ফি জমা দেওয়া যায়। আবেদনকারীকে একটি নির্ধারিত দিনে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য এবং পরবর্তীতে পাসপোর্ট গ্রহণের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয়। অনলাইন সিস্টেমে আবেদন দাখিলের পর তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানো হয়। ইতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আবেদনকারীর অনুকূলে পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়ে থাকে। বিদ্যমান পদ্ধতিতে একটি সাধারণ পাসপোর্ট ১২ কর্মদিবসের মধ্যে এবং এক্সপ্রেস ডেলিভারির ক্ষেত্রে তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়া হয়ে থাকে।
কিছু পুলিশ ভেরিফিকেশন যথাসময়ে না পাওয়ার কারণে বা পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনাবশ্যক কাগজপত্র যাচাইয়ের কারণে আবেদনকারীর ভোগান্তি হয় মর্মে প্রায় অভিযোগ পাওয়া যায়। পাসপোর্ট আবেদনকারীর ভোগান্তি কমানো এবং যথাসময়ে পাসপোর্ট প্রাপ্তি নিশ্চিতের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সদয় অনুশাসন প্রদান করেছেন।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ পাসপোর্ট আদেশ ১৯৭৩ এর ৫(২) ধারায় পাসপোর্ট আবেদনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত সম্পন্ন করার বিধান রয়েছে।
প্রথাগতভাবে বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা এবং বিশেষ ক্ষেত্রে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর এনএসআইয়ের মাধ্যমে তদন্ত সম্পন্ন করে থাকে। পাসপোর্ট সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট দেওয়া যেতে পারে। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্রের পরিবর্তে জন্মনিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে পাসপোর্ট দেওয়া যেতে পারে। ডাটাবেজের সঙ্গে আবেদনের তথ্য মিলে গেলে সে অনুসারে পাসপোর্ট ইস্যু করা হলে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রযোজ্য হবে না।