করোনার কারণে এবার বার্ষিক কর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে না। আয়কর ও বিবরণী (রিটার্ন) জমা দেয়ার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করে থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। করদাতারা স্বাচ্ছন্দ্যে এই মেলায় গিয়ে একই জায়গায় আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া ও কর দিয়ে থাকেন। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় জনসমাগম এড়াতে মেলার আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) এনবিআরের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন কোভিড-১৯ এর কারণে এবার কর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে না। তবে মাঠপর্যায়ের কর অফিসগুলোতে করদাতারা যাতে মেলার মতো সুবিধা পান, সেই ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতারা স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের আয়কর প্রদান করতে পারবেন।
১৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর রাজধানীসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে সপ্তাহব্যাপী এই মেলা হয়। রাজধানীতে মেলা হয় বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে। এ ছাড়া সব জেলা শহরে চার দিন এবং ৪৮টি উপজেলায় দুই দিন মেলা হয়। উপজেলা পর্যায়ে যেসব স্থানে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো এমন গ্রোথ সেন্টারে এক দিন মেলা হয়।
কর মেলার জন্য সাধারণ করদাতারা অপেক্ষা করে থাকেন। কর মেলায় গিয়ে ঝক্কিঝামেলা ছাড়াই অনেকটা সহজে বার্ষিক আয়কর জমার পাশাপাশি কর পরিশোধ করতে পারেন। কর মেলায় করদাতারা কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) গ্রহণ, রিটার্ন ফরম পূরণ থেকে শুরু করে কর পরিশোধের জন্য ব্যাংক বুথসহ নানা ধরনের সেবা পান। একই ছাদের নিচে সব সেবা পাওয়ায় গত দশ বছরে করদাতাদের কাছে কর মেলা জনপ্রিয় হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কর মেলায় করদাতাদের ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়। কর কার্যালয়ে গিয়ে হয়রানি এড়াতে অনেক করদাতা কর মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেওয়া যাবে।
এনবিআরের কর কর্মকর্তারা জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশেই কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এক দশক আগে কর মেলা শুরু হওয়ার পর থেকেই করদাতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।