খাওয়ার সময় পানি পান করার বিষয়ে অনেকের মনেই সন্দিহান আছে। কেউ বলেন, খাওয়ার মাঝে পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। আবার কেউ কেউ বলেন, এতে কোনো সমস্যাই নেই। আসলে কোনটি সঠিক? বিজ্ঞান কী বলছে এ বিষয়ে?
খাওয়ার কথা যখনই কেউ ভাবেন তখন থেকেই মূলত হজম প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়। আমরা যখন খাবার চিবিয়ে খায় তখন তা লালার সঙ্গে মিশে হজম যায়।
এরপর নরম খাবার পাকস্থলীতে প্রবেশ করে অ্যাসিডের সঙ্গে মিশে যায়। খাবার পুরোপুরি হজম করতে পাকস্থলীর গড়ে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যেই শরীরে সব পুষ্টি বন্টন হয়।
অন্যদিকে পানি বেশিক্ষণ পেটে থাকে না। পাকস্থলী থেকে ১০ আউন্স পানি সরাতে প্রায় ১০ মিনিট সময় লাগে। তাই খাওয়ার সময় পানি পান করলেও তা পেটে জমে থাকে না, বরং চিবানো খাবারের মধ্য দিয়ে খুব দ্রুত চলে যায়, আর্দ্রতা জোগায় ও দ্রুত পেট থেকে বেরিয়ে যায়।
পানি অম্লতা কমায় না
যদি পাকস্থলী ‘বোধ করে’ কোনো খাবার হজম করা কঠিন সেক্ষেত্রে এটি আরও এনজাইম তৈরি করে ও তরলের অম্লতা বাড়ায়। এমনকি যদি আপনি আধা গ্যালন জল পান করেন তবে এটি অ্যাসিডিটির স্তরকে প্রভাবিত করবে না।
গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু খাবার আমাদের পেটে অ্যাসিডিটির মাত্রা কমাতে পারে, তবে এটি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যায়।
পানি হজমের গতিকে প্রভাবিত করে না
এমন কোনো গবেষণা নেই যে প্রমাণ করে, খাওয়ার মাঝে পানি পান করলে হজমের গতি প্রভাবিত হয়। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, শক্ত খাবারের চেয়ে তরল শরীর থেকে দ্রুত বেরিয়ে যায়। তবে এটি কখনো হজমের গতিকে প্রভাবিত করে না।
খাওয়ার সময় কি পানি পান করা যাবে?
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, খাওয়ার সময় পানি পান করতে কোনো সমস্যা নেই। বরং খাবারের সঙ্গে পানি পান করলে শক্ত খাবার নরম হয় ও হজমে আরও সাহায্য করে।
তবে খাবার গিলে ফেলার আগে পান করবেন না। কারণ চিবানো খাবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় এনজাইম থাকে যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
খাওয়ার সময় পান করার কিছু সুবিধা আছে। গবেষণা দেখা গেছে, একজন ব্যক্তি যখন খাওয়ার মাঝে পানি পানের জন্য অল্প বিরতি নেন তখন এটি খাওয়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। ফলে মানুষ কম খায় যা ভালো।
আপনি যদি পানির পরিবর্তে খাবারের সঙ্গে চা পান করতে অভ্যস্ত হন তাতেও সমস্যা নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, চা বা পানি পান করার পর অ্যাসিডিটির মাত্রায় কোনো পার্থক্য নেই। তবে চা হতে হবে দুধ-চিনি ছাড়া।