গায়ে রোদ না লাগালে ভিটামিন ডি এর অভাবে নানা রোগ হতে পারে। করোনার অতিমারি, দিনের পর দিন স্কুল ছুটি, বাইরে বেরনোর আতঙ্ক, ব্যস্ততা- নানা কারণে গায়ে রোদ লাগে না বাচ্চাদের। আগে ছোটবেলায় শীত পড়তে না পড়তেই লেপ কম্বলের সঙ্গেই বেরোত তেলের বাটি আর ছাদে রোদ পোহানোর দিন। কিন্তু এখন সবই অতীত। আর এর ফলে বড় কিছু হারাচ্ছি আমরা ও আমাদের বাচ্চারা।
সকালে উঠেই গা ম্যাজম্যাজ, ক্লান্তি থেকে শুরু করে হাতে পায়ের পেশিতে ব্যথা, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, হঠাৎ হঠাৎ মুড পরিবর্তন। কৈশোরের কোঠা পেরোতে না পেরোতেই ভিড় করে আসছে এমন রকমারি সমস্যা। সমাধান কিন্তু সেই সূর্যের আলো অর্থাৎ কিনা ভিটামিন ডি।
আসলে এই ভিটামিনটি শরীরে নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। ফলে এটির অভাব হলে কেবল মাত্র হাড় ক্ষয়ে যাওয়া বা ব্যথা-বেদনা নয়, তৈরি হতে পারে আরও বড় সমস্যা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পেশি নাড়াচাড়া করতেও প্রয়োজন হয় এটির। এমনকী এর সাহায্য ছাড়া মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে বার্তা পর্যন্ত পাঠাতে পারে না স্নায়ু। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও এই ভিটামিনটি ছাড়া ব্যাকটেরিয়া-ভাইরাসদের প্রতিহত করা দুঃসাধ্য।
ক্যালসিয়ামের গুণেই মজবুত হয় দাঁত ও হাড়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিটামিন ডি ঠিক মতো তৈরি না হলে ক্যালসিয়াম কাজ করতে পারে না। ফলে থাবা বসায় ছোটদের রিকেট থেকে শুরু করে বড়দের অস্টিওম্যালশিয়া, অস্টিওপোরেসিস প্রভৃতি নানাবিধ রোগ। অনেক সময় কোলন ক্যানসার, স্তন বা প্রস্টেট ক্যানসারের মতো মরণ রোগ প্রতিরোধেও কাজ করে এই প্রয়োজনীয় ভিটামিনটি।
ক্লান্তি, যথেষ্ট ঘুমের পরেও ঘুমঘুম ভাব, হাড় বা পেশিতে ব্যথা, টেনশন, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁতের ক্ষয় ও নানা সমস্যা, ঘুমের ব্যাঘাত বা ইনসমনিয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, ডিপ্রেশন– এ সবই কিন্তু ভিটামিন ডি-র অভাবজনিত লক্ষণ।
তৈলাক্ত মাছ যেমন স্যামন, টুনা, ম্যাকারেল জাতীয় সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি থাকে। কড লিভার অয়েল, এই ধরনের প্রাণিজ খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে। মাটন, ডিমের সাদা অংশ, মাশরুম, দুধ, ছানা, মাখন থেকে শুরু করে দুগ্ধজাত খাবারেও কিছু ভিটামিন ডি থাকে। কিছু বেবি ফুডেও বাইরে থেকে আলাদা করে ভিটামিন ডি যোগ করা হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে কিছুটা ঘাটতি পূরণে সক্ষম সেগুলিও।
তা ছাড়া বাজারে কিছু ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও পাওয়া যায়। তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ না করে সেগুলি খাবেন না।