ব্যাংক থেকে গৃহনির্মাণ ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি চাকরিজীবীদের বয়সসীমা দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। নতুন নীতিমালার পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এখন থেকে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে বিশেষ সুবিধায় সর্বোচ্চ ৫৮ বছর বয়স পর্যন্ত এ ঋণ নেওয়ার সুযোগ পাবেন তারা। বর্তমানে ৫৯ বছর বয়সে অবসরে যান সরকারি কর্মচারীরা। ফলে অবসরে যাওয়ার নির্ধারিত বয়সের এক বছর আগেও গৃহনির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন তারা। এছাড়াও জুডিসিয়াল সার্ভিসে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যদের এ ঋণের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা সংশোধন করে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৩০ জুলাই প্রথম এ-সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তখন ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৬ বছর নির্ধারণ করা হয়। নতুন নীতিমালায় তা ৫৮ বছর করা হয়েছে। আগের নীতিমালায় জুডিসিয়াল সার্ভিসের স্থায়ী নিয়োগপ্রাপ্ত সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সৈয়দ নাসির এরশাদ এ বিষয়ে বলেন, নীতিমালা গত বছর চূড়ান্ত হলেও এই ঋণ ব্যবস্থার প্রক্রিয়া কয়েক বছর আগেই শুরু হয়েছে। কিন্তু ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা হিসেবে ৫৬ বছর বয়সসীমা নির্ধারণের কারণে অনেকেই আবেদনের যোগ্যতা হারান। ৫৬ বছর বয়স পূর্ণ হয়েছে এমন অনেক চাকরিজীবী বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। আবার জুডিসিয়াল সার্ভিসের স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীরাও এ ঋণের আওতাভুক্ত করার আবেদন করেন। এসব আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার বয়সসীমা বাড়ানো ও জুডিসিয়াল সার্ভিসের কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীদের গৃহঋণ-সংক্রান্ত নীতিমালা কার্যকর হয়েছে। প্রাথমিকভাবে রাষ্ট্রমালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এবং হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন এ ঋণ বিতরণ করছে। তবে সরকার চাইলে অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংককেও এ ঋণ বিতরণের জন্য নিয়োগ করতে পারবে।
যে যে বিষয়ে ঋণ দেওয়া হবে: বাড়ি বানানো, যৌথভাবে জমি কিনে বাড়ি বানানো, জমিসহ সম্পূর্ণ প্রস্তুত বাড়ি ও সম্পূর্ণ প্রস্তুত ফ্ল্যাট কেনার জন্য এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
চাকরির গ্রেড অনুযায়ী কে কত টাকা ঋণ পাবে: সর্বনিম্ন ২০তম গ্রেড থেকে ১৮তম গ্রেডে যেসব কর্মচারী আছেন, তারা ঢাকা শহরে ৩৫ লাখ, জেলা শহরে ২৫ লাখ ও এ দুই জায়গার বাইরে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। আর সর্বোচ্চ ৫ম গ্রেড থেকে তদূর্ধ্ব গ্রেডের কর্মচারীরা ঢাকা শহরের জন্য ৭৫ লাখ, জেলা পর্যায়ে ৬০ লাখ ও অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন।
সরল সুদে এ ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ নির্ধারন করা হয়েছে। এই ঋণের সুদ ৫ শতাংশ ঋণগ্রহীতা সরকারি কর্মচারী এবং ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করবে। তবে কোনো কর্মচারী অবসরে গেলে সরকার তার জন্য ভর্তুকি দেবে না, তখন ঋণগ্রহীতাকেই ১০ শতাংশ সুদ পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২০ বছর।