২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। সরকারি তথ্যমতে ইতোমধ্যে ৯২ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে, ৮ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার বাইরে। চলতি বছরে বাকি ৮ শতাংশ গ্রাহকের ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে পারলে সরকারের শতভাগ বিদ্যুতায়নের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। তবে চলতি বছরের মধ্যেই শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করতেই এ বছরই জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে আরও ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি ভাবে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিমান ১৫ হাজার মেগাওয়াট। নির্মানাধীন কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চলতি বছরের শেষে আরও প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমান বেড়ে ২০ হাজার মেগাওয়াটে দাঁড়াবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, গত এক দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে চারগুণ। আর বিদ্যুতের গ্রাহক বেড়েছে তিনগুণ। ৯২ শতাংশ জনগণ বিদ্যুৎ সেবা পাচ্ছেন, বাকি ৮ শতাংশ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে চরাঞ্চলসহ দূরবর্তী ও বিচ্ছিন্ন এলাকাগুলোয় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২০১৯ সালের মধ্যেই শতভাগ মানুষের কাছে বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিতে পুরোদমে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে সবার কাছে সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়াটা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
আরইবি’র চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব) বলেন, আমরা আশা করছি চলতি বছরের মধ্যেই শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎসেবা পৌঁছে দিতে পারব। বোর্ডের আওতাধীন ৮০টি সমিতিকে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, এ বছর জাতীয় গ্রিডে নতুন ভাবে যুক্ত হওয়া ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে সরকারি প্রকল্প থেকে আসবে ২ হাজার ৬০৫ মেগাওয়াট। আর বেসরকারি প্রকল্প থেকে আসবে ২ হাজার ৩৪২ মেগাওয়াট। সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রথমে পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এ বছরের শেষদিকে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি ও চীনের সিএমসির যৌথ মালিকানাধীন বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
এ ছাড়া প্রতিটি ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বাগেরহাটে ও গাজীপুরে ফার্নেস তেলভিত্তিক কেন্দ্র আগামী ফেব্রুয়ারিতে উৎপাদনে যাচ্ছে। একই সময়ে কাপ্তাইয়ে সৌরবিদ্যুতের ৭ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কেন্দ্র থেকেও উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে। ঘোড়াশালে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষের দিকে, আগামী মে-জুন মাসে এটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। হবিগঞ্জে ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন শাহজিবাজার বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শেষ হবে জুলাইয়ে। একই সঙ্গে মিরসরাইয়ে ১৫০, ঘোড়াশাল তৃতীয় ইউনিটে ২০৬ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কেন্দ্রগুলো বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে আগস্ট মাসে।