চাকরির মেয়াদ (পিআরএল গমনকাল) চার সপ্তাহ না থাকলে দেশে-বিদেশে কোনও শিক্ষা সফরে যাওয়া যাবে না। দেশে-বিদেশে কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ হবে। অবশ্য সচিবদের পলিসি ডায়ালগে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বয়সসীমা নির্ধারিত থাকবে না।
এমন বিধান রেখে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেছে সরকার। সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ‘জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা নীতিমালা, ২০২৩’-এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) প্রকাশিত হয় এটি। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ যাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তারা সবাই নীতিমালায় আওতায় পড়বে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারি চাকরিতে নিয়োজিতদের দেশের ভেতরে এবং বিদেশে প্রশিক্ষণ ও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা প্রযোজ্য হবে।
ব্যক্তির বয়স ৫৭ বছর অতিক্রম করলে স্বল্পমেয়াদি কোর্সে (সর্বোচ্চ চার সপ্তাহ) অংশগ্রহণ করা যাবে না। অবশ্য গ্রেড-২ বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তারা চাকরির মেয়াদ চার সপ্তাহের বেশি থাকলে এ কোর্সে অংশ নিতে পারবেন। এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন মেয়াদি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রেও কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারিত থাকবে। স্বল্পমেয়াদি (চার সপ্তাহ পর্যন্ত মেয়াদি কোর্স) অংশগ্রহণের সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৭ বছর এবং মধ্য (চার সপ্তাহের ঊর্ধ্ব থেকে তিন মাস পর্যন্ত মেয়াদি কোর্স) এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের (তিন মাসের ঊর্ধ্ব হতে ১২ মাস মেয়াদি কোর্স) ক্ষেত্রে তা হবে ৫৫ বছর।
কনফারেন্স, ওয়ার্কশপ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও প্রশিক্ষণের বৈদেশিক অংশের ক্ষেত্রে চাকরির সময়কাল পিআরএল শুরুর আগে ন্যূনতম চার সপ্তাহ অবশিষ্ট না থাকলে অংশগ্রহণ করা যাবে না। কর্মকালীন প্রশিক্ষণ (On the Job Training) এবং সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনও বয়সসীমা নির্ধারিত থাকবে না।
কর্মচারীদের মাসে কমপক্ষে পাঁচ ঘণ্টা হিসাবে বছরে ৬০ ঘণ্টা কর্মকালীন প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।
কোনও কর্মচারী নতুন কর্মস্থলে নিয়োগপ্রাপ্তি বা বদলির পর সংশ্লিষ্ট দফতর তাদের কার্যক্রমের বিষয়ের পরিচিতিমূলক আবশ্যিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। এই প্রশিক্ষণের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ১০ দিন। এটি অনলাইনে অথবা সশরীরে আয়োজন করা হবে। তবে দফতর প্রধান এবং গ্রেড-৩ ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মচারীদের জন্য এ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন নেই।
প্রশিক্ষণ/উচ্চশিক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন না করে কেউ কর্মস্থলে ফিরলে সফল না হওয়ার কারণ গ্রহণযোগ্য কিনা তা যাচাই করা হবে। কারণ, গ্রহণযোগ্য হলে প্রশিক্ষণ/উচ্চশিক্ষা গ্রহণকালে গৃহীত বেতন-ভাতার এক পঞ্চমাংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। আর কারণ অগ্রাহ্য হলে ওই সময় নেওয়া বেতন-ভাতার পুরোটাই ফেরত দিতে হবে।
প্রশিক্ষণ/উচ্চশিক্ষা/গবেষণার ক্ষেত্রে অ্যাকাডেমিক ইন্টিগ্রিটি ও নৈতিকতা পরিপন্থি কোনও কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।