চার বিষয়ের এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করেছে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড। কুড়িগ্রামে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছে উত্তরের আট জেলার শিক্ষার্থীরা। এ খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) দিনাজপুর অফিসের কর্মচারী সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে সাজিদা ইসলাম এবার মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সকালে অনলাইন মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টিভির পর্দায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার খবর দেখে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে। তাকে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না।’
দিনাজপুর সেন্ট ফিলিপস হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এলিন ও মৌমিতা। তারা সম্পর্কে চাচাতো বোন। সকালে তাদের দুজনকেও কান্না করতে করতে পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।
লালমনিরহাট কালিগঞ্জ উপজেলার সুন্দ্রাহবি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে ফারজানা আক্তার। স্থানীয় সাংবাদিক তিতাস আলম বলেন, সকালে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার খবরে তাকে কান্নাকাটি করতে শুনেছি।
কুড়িগ্রাম বর্ডার গার্ড স্কুলের শিক্ষার্থী আলিফ ইসলাম বকসী। সে কুড়িগ্রামের আবুল কালাম আজাদ ঠান্ডার ছেলে। সে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সকালে টিভির স্ক্রলে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার খবর দেখে চোখের পানি মুছতে মুছতে হতাশার সুরে তার বাবাকে বলে, ‘করোনা খাইছে দুই বছর, বন্যা খাইছে এক মাস। দেখা যাক এবার প্রশ্নফাঁস কতদিন খায়।’
ওই জেলার আরেক পরীক্ষার্থী শুদ্ধ শারাফ কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে। সে কান্না করতে করতে বলে, ‘প্রশ্নফাঁসের মতো জঘন্য ঘটনায় আমাদেরকে সাফার করতে হবে, এটা মানি কেমন করে?’
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কয়া নিজপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অংশ নেওয়া এসএসসি পরীক্ষার্থী খালিদ হাসান বলে, ‘করোনা এবং বন্যার কারণে প্রস্তুতি নেওয়ার পরও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এতে আমাদের প্রস্তুতি নষ্ট হয়ে যায়। আবারও আমরা মনোবল জুগিয়ে পরীক্ষার জোর প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করি। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁসের কারণে পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেলো। আমরা পরীক্ষার্থীরা আবারও হোঁচট খেলাম।’
কুড়িগ্রামে এসএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চলতি পরীক্ষার সাধারণ গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং কৃষি বিষয়ে পরীক্ষা স্থগিত করেছে মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড দিনাজপুর।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষাবোর্ডের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।