ঢাকার আশুলিয়া ও ধামরাই, গাজীপুরের কালিয়াকৈর এবং চট্টগ্রামে নানা দাবিতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। সোমবার ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ, বন্ধ কারখানা খুলে দেয়া এবং বকেয়া বেতনের দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
আশুলিয়া (ঢাকা): আশুলিয়া সরকার মার্কেট এলাকার হ্যাং টং বিডি লিমিটেডের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে বাইপাইল আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে শ্রমিকরা মানববন্ধন করেন। শ্রমিকরা জানান, করোনাভাইরাসের কারণে ২৫ এপ্রিল কারখানাটি ছুটি দিয়ে ২৭ এপ্রিল তাদের ১৪ দিনের বেতন দেয়া হয়। বাকি পাওনা ৩০ এপ্রিল দেয়ার কথা বলে কারখানা থেকে তাদের চলে যেতে বলে।
এরপর ৩০ এপ্রিল কারখানায় গেলে স্থানীয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয় এবং কারখানার দেয়ালে ৩৫০ শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নোটিশ টানিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. সারোয়ার হোসেন, আশুলিয়া অঞ্চলের সভাপতি আমিরুল হক আমিন, সহসাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদুল আলম।
ধামরাই (ঢাকা): শতভাগ বেতনের দাবিতে ধামরাইয়ের ১১টি কারখানার শ্রমিকরা একত্রে বিক্ষোভ এবং মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। কারখানাগুলোর মধ্যে কালামপুরের জেআর টাওয়েল, রিনা ফ্যাশন অ্যান্ড টেক্সটাইল, বালিথা এলাকার সরকার রঙিন ঢেউটিন ও স্টিল ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা, ডাউটিয়া আরজাস ব্যাটারি তৈরির কারখানা, আলোকদিয়া এলাকার জোমার ফ্যাশন লিমিটেড, পাবরাইলে লজেন্স অ্যান্ড বেভারেজ উল্লেখযোগ্য।
বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শ্রমিকদের সড়ক অবরোধে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, কালামপুর-কাওয়ালীপাড়া-সাটুরিয়া ও কালামপুর-ভালুম সড়কে যানবাহন চলাচল করেনি।
কালিয়াকৈর (গাজীপুর): উপজেলার পূর্ব চান্দরা এলাকায় ফারইস্ট গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা শতভাগ বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কারখানার ভেতরে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। অপরদিকে তেলিরচালা এলাকায় দুই মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেন।
শ্রমিকরা জানান, ৬০ ভাগ বেতন দেয়ার কারণ জানতে চাইলে কারখানা কর্তৃপক্ষ উত্তেজিত হয়ে তাদের গালিগালাজ করে। খবর ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বেতন না নিয়ে এবং শতভাগ বেতন দাবি করে কর্মস্থল ত্যাগ করে বিক্ষোভ করেন।
চট্টগ্রাম: বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্যারটেক এলাকার পোশাক কারখানা গোল্ডেন সানের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন। শ্রমিকরা জানান, দুই মাস তাদের বেতন দেয়া হয় না। ঈদের আগে এক মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে কিন্তু বোনাস দেয়া হবে না বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
এরপর বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে সোমবার সকাল থেকে আন্দোলনে নামেন কয়েকশ’ শ্রমিক। কর্ণফুলী থানার এসআই মো. আলমগীর জানান, ১৭ মে রকেটের মাধ্যমে বেতন পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মালিকপক্ষ। বোনাসের ব্যাপারে পরে জানানো হবে। এরপর শ্রমিকরা আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ান।