টাইপ ১ ও ২ ডায়াবেটিসের ধরন সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা আছে। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, টাইপ ১.৫ নামেও ডায়াবেটিসের এক ধরন আছে।
একে ল্যাটেন্ট অটোমিউন ডায়াবেটিস ইন অ্যাডাল্ট (এলএডিএ) সুপ্ত অটোইমিউন ডায়াবেটিসও বলা হয়। এক্ষেত্রেও টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কিছু বৈশিষ্ট্য ও লক্ষণ দেখা দেয়।
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের মতো, টাইপ ১.৫ এর একটি অটোইমিউন উপাদান আছে। যেখানে অগ্ন্যাশয় পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয় ও ভুলবশত অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিস কেন হয়?
ক্ষতিকারক রোগজীবাণু থেকে আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে রক্ষা করার জন্য সাধারণত যে অ্যান্টিবডিগুলো থাকে, তা কেন খারাপ হয়ে যায় ও শরীরের নিজস্ব ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো ধ্বংস করতে শুরু করে তা নির্ধারণ করার কোনো উপায় নেই।
তবে বিশেষজ্ঞরা এটিকে জেনেটিক্সের জন্য দায়ী করেছেন। অটোইমিউন অবস্থার পারিবারিক ইতিহাস অনেকটাই এই রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া পরিবেশগতও কিছু কারণ থাকতে পারে যেমন- স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন, ভাইরাল সংক্রমণ ও মানসিক চাপ ইত্যাদি।
টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিসের লক্ষণ?
যদিও টাইপ ১ ডায়াবেটিসের সঙ্গে এর কিছু মিল আছে, তবে এর লক্ষণ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায়। তবে কিছু সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- প্রস্রাব বৃদ্ধি, তৃষ্ণা বৃদ্ধি, দৃষ্টি ঝাপসা, ওজন কমে যাওয়া ও ক্লান্তি।
এটা কিভাবে নির্ণয় করা হয়?
টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিস সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা দেয়। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এটি দেখা দিতে পারে। যা অনেকেই টাইপ ২ ডায়াবেটিস ভেবে ভুল করেন। তবুও অবস্থা নির্ণয়ের প্রাথমিক ধাপ হলো অস্বাভাবিক উচ্চ রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা।
তবে এটি আপনার কোন ধরনের ডায়াবেটিস আছে তা নির্ধারণ করবে না। এ কারণে আপনাকে গ্লুটামিক অ্যাসিড ডিকারবক্সিলেস অ্যান্টিবডির উপস্থিতি নির্ধারণের জন্য একটি পরীক্ষা করতে হবে।
ইনসুলিনের ভূমিকা
টাইপ ১ ডায়াবেটিসের মতো, টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিসও শরীর থেকে পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না। যেহেতু এটি ধীরে ধীরে শরীরে ঘটে এ কারণে মৌখিক ওষুধ প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা।
টাইপ ১ এর তুলনায় টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের কয়েক মাস থেকে বছর পর্যন্ত ইনসুলিনের প্রয়োজন হয় না।
ডায়েট, ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখার মাধ্যমে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে টাইপ ১.৫ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
তবে শরীর যেহেতু ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তাই তাদের ইনসুলিন শটের প্রয়োজন হতে পারে।